ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলের সুধীর বর্মণ। ৪৫ বছর বয়সী এই ভ্যানচালক একজন যুদ্ধশিশু। আর এ কারণেই তাকে শুনতে হয় কটূক্তি। বছরের পর বছর ধরে চলা এই গঞ্জনার হাত থেকে রেহাই চান তিনি; তার হতভাগ্য মা টেপরি বর্মন চান বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি। বার্ধক্যজনিত নানা রোগে এ নারী এখন শয্যাশায়ী। পান না কোনো ধরনের সরকারি ভাতাও।
যুদ্ধশিশু বলেন সুধীর বর্মণ, নানা কথা শুনতে হয় আমাকে। স্বীকৃতি তো পেল না, মা কোনদিন চলে যায় কে জানে?
টেপরি বমর্ণের ভাতা চালু হবে কবে- এমন প্রশ্নে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা শোনালেন আশার বাণী।
রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার নাহিদ হাসান বলেন, ভাতার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আশা করি ওনারা শিগগিরই পেয়ে যাবেন।
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার যুদ্ধশিশু শামসুন্নাহারের গল্পটা যেন আরও করুণ। বয়স এখন ৪৫। মা বীরাঙ্গনা হওয়ার কারণে ২০ বছর আগে ভেঙে গেছে শামসুন্নাহারের সংসার।
তিনি জানান, বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন নানা ধরনের কথা বলতে থাকে তার মাকে নিয়ে। পরে মাকে জিজ্ঞেস করে বসেন শামসুন্নাহার। জানতে পারেন তিনি একজন যুদ্ধশিশু। এরপর আর সংসারের পথ মাড়াননি।
সুধীর বর্মণ, শামসুন্নাহারের মতো বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য যুদ্ধ শিশু। কিন্তু তার কোনো সঠিক তথ্য নেই সরকারের কাছে।
তবে যুদ্ধশিশুদের প্রতি অবিচার হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বলেন, যুদ্ধশিশুদের সাথে কোনো ধরনের অনায্য আচরণ করার অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব। বীরাঙ্গনারা ভাতা না পাওয়ার ঘটনা থাকলে খতিয়ে দেখে ভাতা প্রদান করা হবে।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply