রাজধানীর সাতরাস্তা থেকে মহাখালী পর্যন্ত রাস্তা ও ফুটপাত প্রভাবশালী বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কাছে কুক্ষিগত হয়ে আছে। এর ফলে প্রলম্বিত হচ্ছে সংস্কার কাজ, বাড়ছে জনভোগান্তি।
সাতরাস্তা থেকে মহাখালী পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় আড়াই কিলোমিটার। সড়কের দু’পাশেই রাস্তা ও ফুটপাতের অনেকটা অংশ দখল করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। সাধারণ হকারদের ফুটপাত থেকে সহজে সরানো গেলেও প্রভাবশালীদের কবল থেকে রাস্তা দখলমুক্ত করা কঠিন। তারই জলন্ত প্রামাণ মিলল এ সড়কে। স্কয়ার গ্রুপ, কোহিনূর কেমিক্যাল, হক গ্রুপসহ অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান রাস্তা এবং ফুটপাত দখল করে আছে। যার ফলশ্রুতিতে নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না সড়ক ও ফুটপাত সংস্কার। যদিও জায়গা দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
রাজধানীর ভেতরে একমাত্র শিল্প এলাকা তেঁজগাও। সাতরাস্তা থেকে মহাখালী পর্যন্ত প্রধান সড়কের দুই পাশে রয়েছে নামিদামি অনেকগুলো শিল্প প্রতিষ্ঠান। মগবাজার থেকে সাতরাস্তা ফ্লাইওভার চালুর পর থেকে এই সড়কটির ব্যস্ততা বেড়ে যায় বহুগুণ। নগরবাসীর চলাচল স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে গত জুলাই মাসে সিটি করপোরেশন সড়ক ও ফুটপাত সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু দীর্ঘ পাঁচ মাসেও শেষ হয়নি কাজ। বরং ভোগান্তি বাড়ছে পথচারীদের।
বিলম্বের কারণ জানতে চাওয়া সিটি করপোরেশন ও ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান জনি এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে কথা বলেন এই প্রতিবেদক। জনি এন্টারপ্রাইজের সাইট ইঞ্জিনিয়ার জানান, রাস্তার দুই পাশে ১৫ থেকে ৩০ ফুট পর্যন্ত সড়কের জায়গা বেদখল হয়ে আছে। যে কারণে ঠিকমতো কাজ করা যাচ্ছে না। আর সিটি করপোরেশন বলছে- তারা জায়গা ছাড়ার নোটিশ দিয়েছে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে। এর বিরুদ্ধে আবার কেউ কেউ আদালতেও গেছে।
এই সড়কের দু’পাশে হক গ্রুপ, স্কয়ার গ্রুপ, কোহিনূর কেমিক্যাল, রেমি কেমিক্যাল, প্যাকার্স ইন্ডাস্ট্রিজের মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সরকারের কাছ থেকে এসব জায়গা ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেয়া হয়েছে। প্যাকার্স ইন্ড্রাস্ট্রিজ এর ম্যানেজার মাহবুব হোসেন এবং রিমো কেমিক্যালের জেনারেল ম্যানেজার রাইসুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জায়গা দখলের বিষয় সরাসরি অস্বীকার করেন।
আড়াই কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে মোট ১২টি পয়েন্টে আটকে আছে কাজ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এর নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে, রাস্তা এবং ফুটপাথ দখলমুক্ত এবং কবে নাগাদ সংস্কার শেষ হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেতে পারেননি তিনি।
প্রভাবশালী ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দখলের তালিকায় রয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও। বিদ্যুৎ বিভাগের অফিসসহ বেশকিছু সরকারি অফিসও ফুটপাতের জায়গা দখলের সারিতে নাম লিখিয়েছে।
Leave a reply