৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর ১০০ দিন কেটে গেল কাশ্মীরে। ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধার অভাব প্রকট রেখেই। এখন যেমন বরফে বিধস্ত ভূস্বর্গ। চরম নাকাল বাসিন্দারা।
৫ অগস্ট জম্মু-কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই থেকে বিদ্যুৎ, যানবাহন থেকে শুরু করে ইন্টারনেট, সব ধরনের পরিষেবাতেই বঞ্চিত ভূস্বর্গ। বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। অধিকাংশ সরকারি কর্মচারীই কাজে যেতে পারছেন না।
মওসুমের প্রথম তুষারপাতের পর বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুৎ ছাড়াই দিন কাটছে কাশ্মীরে। সোপিয়ানের বছর ষোলোর স্নোবার বানি এ বছর দশমের পরীক্ষা দেবে। তার কথায়, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় সব ছাত্রছাত্রীদের প্রস্তুতিই বিঘ্নিত হচ্ছে। মোমবাতির আলোয় পড়া যাচ্ছে না। দক্ষিণ কাশ্মীরের বেশিরভাগ জায়গাই বিদ্যুৎহীন। আমাদের সমস্যা নিয়ে প্রশাসনের ভাবার সময় আছে বলে তো মনে হয় না।’ তার মতো বহু পড়ুয়া সমস্যায়। সামনেই পরীক্ষার মওসুম।
এক ছবি উত্তর কাশ্মীরেও। রাস্তা থেকে বরফ সরানো, বিদ্যুৎ ফেরানো, কোনও কাজই ঠিকভাবে হয়নি এখনও।
বান্দিপোরার বাসিন্দা আলতাফ ভাটের অভিযোগ, ‘এখানে ভিতরের সব রাস্তায় বরফ। প্রশাসনের কাউকে দেখাই যাচ্ছে না।’
কাশ্মীরের বিদ্যুৎ দপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার হাসমত কাজি বলেন, ‘শ্রীনগর সহ বড় শহরগুলিতে বিদ্যুৎ ফেরানো হয়েছে। বাকি উপত্যকায় আরও কয়েকদিন লাগবে।’ শ্রীনগরেও রাস্তার অবস্থা তথৈবচ। বরফ থাকায় গাড়ি চলছে না অনেক জায়গাতেই।
১০০ দিনের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে উপত্যকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ ইন্টারনেট বন্ধ থাকা নিয়ে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে না পারায় ক্ষুব্ধ যুবসমাজ। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বিপাকে সংবাদমাধ্যমও। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার শ্রীনগরে রাস্তায় নামে সাংবাদিকরা। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের কিছু দিন পর থেকে মিডিয়া সেন্টার খুলে দেওয়া হয় শ্রীনগরের সাংবাদিকদের জন্য। কিন্তু শ’তিনেক সাংবাদিকের জন্য মাত্র ১০টি কম্পিউটার। প্রবীণ সাংবাদিক পারভেজ বুখারি বলেন, ‘ইন্টারনেট এখন মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। সাড়ে তিন মাস ধরে আমরা কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছি।’
চলতি বছর নিষেধাজ্ঞা আর প্রতিবাদের জন্য ১৫০ শিক্ষাদিবস নষ্ট হয়েছে স্কুলে। এখনও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বন্ধ।
শ্রীনগরের ডিভিশনাল বশির আহমেদ জানান, আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতেই ১৪৪ ধারার ব্যবহার ও ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছে।
Leave a reply