প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ভুগছে সারা বিশ্ব। সরাসরি ঝুঁকিতে কোটি কোটি মানুষ। স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকির মুখে পড়েছে শিক্ষাও। ভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে বিশ্বজুড়ে স্কুলে যাচ্ছে না প্রায় ২৯ কোটি শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শুধু চীনেই স্কুলের বাইরে রয়েছে ১৮ কোটি ছাত্রছাত্রী। করোনার বিস্তার ঠেকাতে দেশে দেশে লাখ লাখ স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে গত প্রায় দুই মাস ধরে কার্যত ঘরবন্দি হয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছে বিশাল সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে। খবর এএফপির।
ইতিমধ্যেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চীন ছাড়িয়ে আরও ৮০টি দেশে থাবা বসিয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ায় চীন, হংকং, ম্যাকাও, ভিয়েতনাম, মঙ্গোলিয়া, জাপান, ইরান, পাকিস্তান, ইরাক ও ইতালিসহ ১৩টি দেশে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ রাখা হযেছে। এছাড়া আরও ৯টি দেশে বিচ্ছিন্নভাবে স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে। এতে কোটি কোটি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে শিক্ষার গ্যাপ পুষিয়ে নিতে কোনো দেশে অনলাইন শিক্ষণ চালু করা হয়েছে। করোনা ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে চীনজুড়ে স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে দেশটির প্রায় ১৮ কোটি শিশু ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।
করোনা ভাইরাসের জেরে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে ইতালি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত সংক্রমণে মারা গেছে ১০৭ জন। বুধবার এক ঘোষণায় আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন দেশটির কর্মকর্তারা। ভারতেও ভাইরাসে নতুন করে আক্রান্তের খবর সামনে আসতেই ত্রাস ছড়িয়েছে। ভাইরাসের প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক পর্যটন এবং বিমান পরিবহনে। পাশাপাশি প্রভাব পড়ছে খুদে স্কুল শিক্ষার্থীদের ওপরও। ভারতের ছাত্র-ছাত্রীদের ওপরও করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে ভালোভাবেই। বিশেষ করে রাজধানী নয়াদিল্লি ও পার্শ্ববর্তী এলাকার স্কুলগুলোতে। এখনও পর্যন্ত এখানে ২৯ জন আক্রান্ত হয়েছে। এই অবস্থায় নয়ডায় দুটি স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছিল তিন দিন।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনার কারণে শিশুদের অ্যাকাডেমিক ভবিষ্যৎ সংকটের মুখে। যা গোটা বিশ্বেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাই দ্রুত এ সমস্যার কার্যকর সমাধান জরুরি। এর মধ্যে কয়েকটি দেশ অনলাইন ক্লাস চালু করার প্রস্তুতি নিলেও অপর দেশগুলোর ক্লাস পুরোপুরি বন্ধ হয়ে আছে। মহামারী পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠলে স্কুল বন্ধ করে দিতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্য।
শিশুরা যাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হয়, সেজন্য প্রাথমিক স্কুলগুলোকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখছে দিল্লি সরকার। বৃহস্পতিবার দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী তথা শিক্ষামন্ত্রী মণীশ শিশোদিয়া এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, দিল্লি সরকারের সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাইমারি স্কুল, পৌরসভা পরিচালিত প্রাইমারি স্কুল এবং বেসরকারি প্রাইমারি স্কুলগুলো ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
মণীশ শিশোদিয়া টুইটারে লিখেছেন, ‘শিশুদের মধ্যে যাতে করোনাভাইরাস না ছড়িয়ে পড়ে, সেজন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সরকার অবিলম্বে প্রাথমিক স্কুলগুলো বন্ধের নির্দেশ দিচ্ছে।’
Leave a reply