বিশ্বজুড়ে তোলপাড় তুলে দিয়েছে করোনাভাইরাস। প্রাণহানির পাশাপাশি বৈশ্বিক অর্থনীতির অনেক হিসাবনিকাশ পাল্টে দিয়েছে করোনা। বিমানে ফ্লাইট বাতিল থেকে শুরু করে শেয়ারবাজারে ধস— কী হয়নি? এর প্রভাবে সম্পদ কমেছে বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের। আর তার মূল্য ৩ হাজার ৭৭০ কোটি ডলার!
সোমবার একদিনে বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর ৯ জনের সম্পদ কমেছে ১০০ কোটি ডলারের ওপরে। টাকার অঙ্কে ও হারে সবচেয়ে বেশি সম্পদ কমেছে বিলাসবহুল পণ্য নির্মাতা বার্নার্ড আরনল্টের। একদিনে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার নেই হয়ে গেছে তার! যা তার মোট সম্পদমূল্যের ৬ শতাংশ। তিনি প্যারিসভিত্তিক এলভিএমএইচের প্রধান নির্বাহী এবং বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী।
সোমবার দিন শেষে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের সম্পদমূল্য কমেছে ৫৬০ কোটি ডলার। এর আগের সপ্তাহেই সম্পদ কমেছিল ১ হাজার ৪১০ কোটি ডলার। আর আমাজনের শেয়ারমূল্য কমেছে ৫ শতাংশের বেশি।
বাদ যাননি ওয়ারেন বাফেটও। তার সম্পদ কমেছে ৫৪০ কোটি ডলারের। আগেই বিষয়টি আঁচ করতে পেরে কিনা দুই সপ্তাহে আগে বাফেট করোনাভাইরাসকে মার্কিন অর্থনীতির সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে মন্তব্য করেছিলেন।
করোনার প্রকোপ থেকে বাদ যায়নি শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানি ফেসবুক ও অ্যালফাবেটও। এই দুই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ ও ল্যারি পেজের সম্পদমূল্য কমেছে যথাক্রমে ৪২০ কোটি ও ৩৩০ কোটি ডলার।
মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বিল গেটসের সম্পদ করেছে ৩৮০ কোটি ডলার। করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় তার ফাউন্ডেশন ১০ কোটি ডলার অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে।। সাধারণত স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন তিনি। এই কারণে হয়তো কোপটা তুলনামূলক কম পড়েছে গেটসের ওপর।
তবে এই পরিস্থিতির মধ্যেও আরেক শীর্ষ ধনী মাইকেল ব্লুমবার্গের সম্পত্তি কমেনি। এর অন্যতম কারণ স্টক এক্সচেঞ্জে তাদের শেয়ারের কোনো লেনদেন হয় না।
এই পরিস্থিতি অবশ্য একেবারেই নতুন-তা বলা যাবে না। বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে ও স্টক মার্কেটের দরপতন ঘটলে শীর্ষ ধনীদের সম্পদের হেরফের ঘটে থাকে। তাদের সম্পদ ও বিনিয়োগের পরিমাণ এত বেশি যে সূচকের সামান্য ওঠানামাই বড় পরিমাণ সম্পদের ক্ষয়-বৃদ্ধি ঘটায়। করোনাভাইরাসের প্রভাবেও সেটিই ঘটেছে। তবে, এটি নিকট অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।
Leave a reply