পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
মরণব্যধি করোনাভাইরাস নিয়ে পটুয়াখালীতে জেলা প্রশাসনের গণবিজ্ঞপ্তি শুধু কাগজে কলম আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবের চিত্র ভিন্ন।
সারাদেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হওয়ায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যে যেভাবে পারছে নির্বিঘ্নে জেলায় প্রবেশ করছে। মঙ্গলবার রাতভরের পর বুধবার দিনভর এ চিত্র দেখা গেছে লেবুখালী থেকে শহরের চৌরাস্তা এলাকার মোড় পর্যন্ত।
যাত্রীবাহি বাস না পেয়ে এ্যাম্বুলেন্স, মালবাহি যানবাহনে এমনকি ঝুঁকিপূর্ন তেলের ট্যাঙ্কারে বসেও শত শত লোকদের জেলায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। একই চিত্র দেখা গেছে লেবুখালী ফেরিতেও। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকেই প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানায়, গত ২৪ মার্চ দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটের সময় ডিসি পটুয়াখালী আইডি থেকে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোঃ মতিউল ইসলাম চৌধুরীর স্বাক্ষরিত একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। যার স্মারক নম্বরঃ ০৫.১০.৭৮০০.০০৮.০৩.০০২.১৮-২১৩।
যাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হতে সৃষ্ট মহামারির ঝুঁকি মোকাবেলায় এবং জেলার মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে এ জেলায় আগমনকারী সকল প্রকার যাত্রীবাহি লঞ্চ, আন্তঃজেলা বাস সার্ভিস, দূরপাল্লার ও স্বল্পপাল্লার গণপরিবহন এবং সকল প্রকার অটোরিক্সা, অটোবাইক, ইজিবাইক ইত্যাদি গণপরিবহন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো।’
কিন্তু ওই বিজ্ঞপ্তি জারির পরপরই লঞ্চ ও বাস চলাচল বন্ধ হলেও বাকি সকল পরিবহন চলাচল বন্ধ না হয়ে এখনও অবধি নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। এদিকে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা গেছে যে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যাত্রীবাহি মোটরসাইকেল, টমটম, মাইক্রো, অটো, এ্যাম্বুলেন্স, ট্রাক লরিসহ বিভিন্ন পরিবহনে যে যার মত করে শহর এবং জেলায় প্রবেশ করছে।
আজ বিকাল পর্যন্ত এটা অব্যাহত ছিল। দুপুর দুইটার দিকে শহরের প্রবেশদ্বার টোলঘর এলাকায় দেখা গেছে, সৈকত ফিলিং স্টেশন এর একটি তেলের ট্যাঙ্কারের ওপরে ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় বসা আছে সতেরজন লোক। তাদের সাথে একাধিক ব্যাগভর্তি মালামাল। বরিশাল মেট্রো চ-৪১-০০০১নম্বরের ওই ট্রাকটির ড্রাইভারের নাম অনেক চেষ্টা করেও জানা যায়নি।
তবে উপরে মুখে মাস্ক পরা (সরকারী চাকুরিজীবি) এক যাত্রী বলেন, ভাই অনেক কষ্ট করে ঢাকা থেকে বরিশাল পর্যন্ত আসছি। সেখান থেকে কোন গাড়ী না পেয়ে এইটায় চড়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে কেন আসছেন জানতে চাইলে কোন জবাব দেননি তিনি।
স্থানীয় সচেতন মহলের ধারনা, পটুয়াখালীর বাইরের কাউকে প্রবেশ করতে না দেয়ার জন্যই যদি লঞ্চ বা বাস বন্ধ করা হয় তাহলে বিকল্প পরিবহন কেন বন্ধ করা হলোনা? আর এভাবে যদি লোকজন আসতে থাকে তাহলে করোনার ঝুঁকি মারাত্নক আকার ধারণ করতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার রাতে ঢাকা ফেরত বাউফলের একজনকে বরিশাল করোনা ইউনিটের আইসোলেশনে ভর্তি করা হয়েছে। তার মতো ঢাকা ফেরত কয়েক হাজার লোক গত দুইদিনে জেলায় প্রবেশ করেছে।
Leave a reply