ভোলা প্রতিনিধি:
মেঘনা, তেঁতুলিয়া ও বঙ্গপসাগর বেষ্টিত দ্বীপ জেলায় বুধবার ভোর রাত থেকেই ঝড়ো বাতাস বইছে। আম্পানের প্রভাবে উত্তাল মেঘনা ও তেতুলিয় নদী। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে থেমে থেমে ধমকা হাওয়া ও মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। স্বাভাবিকের চেয়ে ৩/৪ ফুট উচ্চতায় নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোলার চরফ্যাশনের বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন ঢালচরের পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে মানুষের ঘর ভিটা, রাস্তাঘাট।
ঢাল চর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম জানান, সকাল থেকে এই ইউনিয়নে ঝড়ো বাতাস বৃষ্টি হচ্ছে। নদীর পানি বেড়ে গেছে ৩/৪ ফুট উচ্চতায়। এতে করে পুরো ইউনিয়নে প্রায় ৭ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ইউনিয়নের সকল রাস্তা ঘাট। তিনি আরও জানান, ইউনিয়নের ১৭ হাজার মানুষের মধ্যে নদী ভাঙ্গনের ফলে বিগত দিন গুলোতে কয়েক হাজার মানুষ অন্যত্র চলে গেছে।
এছাড়া, ইউনিয়নটিতে ১৩ হাজারের মতো লোক সংখ্যা রয়েছে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গতকাল ৫ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হলেও সেখানে এখনো প্রায় ৭/৮ হাজার মানুষ থাকায় তারা আজ পানি বন্ধী হয়ে পড়েছে। অনেকে সেখানকার কোস্ট ট্রাস্ট অফিস ও পুলিশ ফাঁড়ির ভবনে আশ্রয় নিচ্ছে।
অপর দিকে পাশের ইউনিয়নের কুকরী-মুকরীও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন এলাকা। সেখানকার চেয়ারম্যান আবুল হাশেম মহাজন জানান, আজ সকাল থেকে তার ইউনিয়নের চর পাতিলায় এলাকায় ৪/৫ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সেখানে প্রায় ৩ হাজার লোক পানি বন্ধী হয়ে পড়েছে।
ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানিয়েছেন, ভোলার চরফ্যাশন ও মনপুরাসহ দুর্গম এলাকার চরাঞ্চল থেকে এ পর্যন্ত ৩ লাখ ১৬ হাজার মানুষ ও ১ লাখ ৩৬ হাজার গবাদি পশুকে আনা হয়েছে। এছাড়া করোনা প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় প্রতিটি আশ্রয় কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে। হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাল্কা সর্দি কাশি যাদের হবে তাদেরও পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। রাত
থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসা মানুষকে খাবার দেয়া হয়েছে। জেলায় ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলায় নগদ ৭ লাখ টাকা ও ২০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও চরাঞ্চলের মানুষদের আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে কোস্টগার্ড, পুলিশ ও জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে রেডক্রিসেন্ট ও সিপিপির ১০ হাজার ২শ সেচ্ছাসেবী কর্মী।
Leave a reply