পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের পানি আর টানা বৃষ্টিতে পটুয়াখালী পৌর শহরসহ জেলার অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হচ্ছে। জরুরি কাজে ঘর থেকে বের হয়ে অনেকেই আটকে পড়েছে। শহরে যানচলাচলে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৮ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে গলাচিপা-পটুয়াখালী সড়কের হরিদেবপুর ফেরিঘাট ডুবে যাওয়ায় চার ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সড়ক পথে গলাচিপার সাথে সারা দেশের চার ঘণ্টা যোগাযোগ বন্ধ ছিল বলে জানা গেছে।
গলাচিপার হরিদেবপুর ফেরিঘাটের ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন জানান, “পূর্ণিমার প্রভাবে গত দুদিন থেকে গলাচিপায় থেমে থেমে বৃষ্টি ও ঝড়ো বৃষ্টি হচ্ছে। একইসাথে নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে এক থেকে দুই ফুট পানি বেশি ওঠায় হরিদেবপুর ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে ডুবে যায়। এতে বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত সব ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে গলাচিপার সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল।”
এদিকে, গলাচিপা সদর ইউনিয়নের কৃষক মোশররফ হোসেন বলেন, পৌরসভাসহ পানপট্টি, পক্ষিয়া, পাতাবুনিয়া, চরকারফারমা, চরবাংলা, চরকাজল, বদনাতলী, পানপট্টি, বোয়ালিয়া, গোলখালী, নলুয়াবাগীসহ বিভিন্ন ছোট ছোট গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে আমন ধানের বীজ তলার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয় গলাচিপা পৌর মেয়র আহসানুল হক তুহিন বলেন, “গলাচিপা পৌর এলাকার ব্যবসায়ীদের বড় একটি অংশ রয়েছে ওয়াবদা বেড়ি বাঁধের বাইরে। তাই এ বিষয় পৌর সভার ৬টি ওয়ার্ডের ওয়াবদা বেড়ি বাঁধের বাইরের অংশে মিনি পোল্ডার করার জন্য বর্তমান এমপি মহোদয়ের ডিও লেটারসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করেছি যাতে তারা এ এলাকায় একটি মিনি পোল্ডার করে। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কোন উদ্যোগ নেয়নি। এ অবস্থা চলতে থাকায় পৌর এলাকার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।”
অপরদিকে জেলার কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া, নিজামপুর গ্রাম রাঙ্গাবালীর চরমোন্তাজ, চরআন্ডাসহ অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এদিকে পটুয়াখালী পৌরসভার নবাবপাড়া, জুবিলীস্কুল সড়ক, পুরাতন হাসপাতাল সড়ক, মহিলা কলেজ সড়ক, সিভিল সার্জন অফিস, সড়ক ও জনপথ অফিসসহ বিভিন্ন সড়ক পাড়া মহল্লা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। রাত পর্যন্ত বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি জমে চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র অফিসার বশির আহমেদ জানান, “পটুয়াখালী জেলায় গতকাল রাত ৯টা থেকে আজকে রাত ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৮০ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।”
ইউএইস/
Leave a reply