গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় গাইবান্ধা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ২৬টি ইউনিয়ন। এতে চার উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দেড় লাখ মানুষ।
গত শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে সব রেকর্ড ভেঙে বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদীর পানি শহর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ও করতোয়া নদীর পানি কাটাখালি পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এমন ভয়াবহ পানিবৃদ্ধির ঘটনায় বিপদজ্জনক পরিস্থিতিতে পড়েছে এলাকাবাসী।
এদিকে, পানির প্রবল চাপে ঘাঘট নদীর শহর রক্ষা বাঁধের কিশামত বালুয়াসহ ২টি পয়েন্ট ও ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ফুলছড়ি ৪টি অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে ফুলছড়ির ভাষারপাড়া এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে গর্তের সৃষ্টি হয়। এতে ৩০টি গ্রামের মানুষের মাঝে আতংক দেখা দিয়েছে।
ইতোপূর্বে যেসব এলাকা থেকে পানি নেমে গিয়েছিল ওইসব এলাকা আবার নতুন করে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ফলে ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ওঠায় পানিবন্দি পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। অনেকে ইতোমধ্যে বাড়িঘর ছেড়ে গরু-ছাগল নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। কিন্তু শুকনো খাবার ও জ্বালানির অভাবে খাদ্য সংকটে পড়েছে বন্যার্ত মানুষরা।
এছাড়া পানিতে গ্রামীণ রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ২৬টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি, আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, বাদাম ও মরিচসহ বিভিন্ন শাকসবজির ক্ষেত। ভেসে গেছে অন্তত ৫ শতাধিক পুকুর ও জলাশয়ের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন জানান, বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষদের জন্য ৪০০ মেট্রিক টন চাল, ৩ হাজার ৬০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, সাহায্য হিসেবে সাড়ে ১৪ লাখ টাকা ও শিশু খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা সরকারি ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
Leave a reply