গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বিলীন হয়েছে গাইবান্ধা সদরের কামারজানী ইউনিয়নের গো-ঘাট গ্রামের প্রাচীন দুর্গা মন্দির। গতকাল দুপুরে মন্দিরটি নদীর গর্ভে চলে যায়। ভাঙনের তীব্রতা এতবেশি যে, মন্দিরটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ারও সময় পাওয়া যায়নি। চলমান ভাঙনরোধে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড শুক্রবার পর্যন্ত কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এছাড়া দুই দফা বন্যা ও নদের অব্যহত ভাঙনে গত কয়েক দিনে গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি ও আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে স্লুইস গেট, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কামারজানি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, বন্দর, কামারজানি মার্চেন্ট হাইস্কুলসহ অন্তত পাঁচশ পরিবারের বাড়িঘর ও ফসলি জমি।
স্থানীয়রা জানায়, গো-ঘাট গ্রামে প্রায় দেড় সহস্রাধিক পরিবারের বসবাস ছিল। চার বছর আগে গ্রামটি ভাঙনের কবলে পড়ে। এরআগেও গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক পরিবারের বসত বাড়ি, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি মসজিদসহ অসংখ্য স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এদিকে, ভাঙনের শিকার মানুষরা তাদের বাড়ি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। গরু-ছাগল নিয়ে বসবাসের জন্য একটু মাথা গুজতে এদিক-ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছেন। ইতোমধ্যে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু বাঁধ আর অন্যের জায়গায়।
তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের কবলে পড়ছে গ্রামগুলো। নদীর ভাঙনে অনেককে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে। গৃহহারা হয়েছে কয়েকশ পরিবার। তাদের অনেকেই খেয়ে না খেয়ে অতি কষ্টে জীবন পার করছেন।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান বলেন, ভাঙনরোধে পাউবো প্রতিরক্ষামুলক কাজ করলেও তাতে ভাঙন ঠেকানো সম্ভব হয়নি। তবে ভাঙন রোধে ইতোমধ্যে ৪০১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেক অনুমোদন করেছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ওই এলাকার মানুষ নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে।
Leave a reply