ঠাকুরগাঁওয়ে হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

|

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রাজাগাঁও গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রশিদুল ইসলাম (১৬) নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে শহিদুল ইসলাম বুলু (৫৯) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বিএম তারিকুল কবীর জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় প্রদান করেন।

এছাড়াও মামলার অপর আসামি বাহাদুর আলীর বিরুদ্ধে ৩২৩ ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫শ টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।

যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত আসামি শহিদুল ইসলাম বুলু ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দক্ষিণ রাজাগাঁও গ্রামের মৃত জাকারিয়ার ছেলে এবং ৬ মাস কারাদণ্ডে দন্ডিত বাহাদুর আলী একই গ্রামের সংলু কসাইয়ের ছেলে।

একই মামলায় আসামি আশরাফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, খাদেমুল ইসলাম, একরামুল হক, শাহাদুর, সলিম উদ্দীন ওরফে সংলু কসাই, রজব আলী, শামীম হোসেন, শাহিনুর মোছা ফরিদা বেগমসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০০৬ সালের ১ জুন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মামলার বাদি সিরাজুল ইসলাম তার ২ সহোদর ভাই শাহালম ও রশিদুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির অনতিদূরে রাজাগাঁও মৌজায় পৈত্রিক জমিতে হাল চাষ করতে যায়।

এর কিছুক্ষণ পর দন্ডিত আসামিরা বেআইনী জনতায় দলবদ্ধ হয়ে লাঠি সোটা লোহার রডসহ অবৈধ অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাদিকে হালচাষে বাঁধা দেয়। বাদি তাদের বাঁধা দেওয়ার কারণ ও মালিকানার পক্ষে কাগজ দেখতে চাইলে আসামি শহিদুল ইসলাম বুলুর নির্দেশে আসামিরা বাদির উপর চড়াও হয় এবং এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করে।

বাদিকে মারপিট করায় তার অপর ২ ভাই তাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে তারা তাদের উপরও হামলা চালায় এবং এলোপাতাড়ি মারপিট করতে থাকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা আহতদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

পরদিন ২ জুন বিকেল ৪টায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রশিদুল ইসলাম মারা যায়।

এ ঘটনায় মৃতের বড়ভাই সিরাজুল ইসলাম বাদি হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০০৭ সালের ২৬ এপ্রিল তদন্ত শেষে ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়। পরবর্তীতে আদালতে তাদের জবানবন্দী নেয়া হয়। আসামি শহিদুল ইসলাম বুলুর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাদের দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত করেন আদালত।

এছাড়া অপর আসামি বাহাদুর আলীর বিরুদ্ধে ৩২৩ ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫’শ টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয় এবং অন্যন্য ১০জন আসামির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply