ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে আদালত চত্বরে মায়ের কাছ থেকে শিশুকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ

|

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে এক মায়ের কাছ থেকে শিশুকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিশুর মামা কিবরিয়া পাঠান
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

লিখিত অভিযোগ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ৭ বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার রাধানগর গ্রামের ইসরাত জাহানের সাথে ঢাকার উত্তরখান এলাকার পুলার টেকের সাইফ উদ্দিন সিদ্দিকের বিয়ে হয়। ২০১৪ সালের আহিয়ান সিদ্দিক নামে একটি ছেলে শিশুর জন্ম দেন ইসরাত জাহান।

২০১৮ সালে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে শ্বশুর বাড়িতে রেখে যান সাইফ উদ্দিন সিদ্দিকি। সম্পর্কের অবনতির কারণে ২০১৯ সালে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ২০১৯ সালে সন্তানের অভিভাবকত্ব পাওয়ার জন্য শিশুর মা ইসরাত জাহান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা দায়রা জজ আদালতের আখাউড়া সহকারী জজ ও পরিবার আদালতে একটি মামলা করেন। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক ধার্য্য তারিখে মাকে দেখানোর জন্য নাবালক শিশু সন্তানকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেয় আদালত। আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে শিশুর পিতা সাইফ উদ্দিন সিদ্দিকি ১৮ অক্টোবর জেলা দায়রা জজ আদালতে সিভিল রিভিশন মামলা করেন।

ওই মামলায় সোমবার নাবালক শিশু ও তার বাবা সাইফ উদ্দিন সিদ্দিককে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনা দেন। দুপুরে আদালতে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে শিশু আহিয়ান সিদ্দিকিকে মামলার প্রত্যেক ধার্য্য তারিখে তিন ঘণ্টার জন্য মা ইসরাতের কাছে থাকার নির্দেশ দেন জেলা দায়রা জজ মোহাম্মদ শফিউল আজম। শুনানি শেষে এজলাস থেকে শিশু আহিয়ান সিদ্দিকিকে কোলে নিয়ে মা ইসরাত জাহান জেলা দায়রা জজ আদালত ভবনের সামনে যান। সে সময় শিশুর পিতা সাইফ উদ্দিন সিদ্দিকি শিশু আহিয়ান সিদ্দিকিকে কোলে নিয়ে স্বজন ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)
সহায়তায় গাড়িতে উঠে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় উপস্থিত থাকা আইনজীবীসহ লোকজন প্রতিবাদ করলে তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

প্রতিবাদের মুখে পরবর্তীতে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করে। পরে তিন ঘণ্টা মায়ের কাছে থাকার পর শিশু আহিয়ান সিদ্দিকিকে নিয়ে ঢাকার দিকে রওয়ানা হন পিতা সাইফ উদ্দিন সিদ্দিকি। বাদীপক্ষের আইনজীবী এ্যাড. মোর্শেদ আলম ও এ্যাড. শরিফুল আলম জানান, গোয়েন্দা পুলিশ জোরপূর্বক শিশুকে তার মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। আদালতের নিজস্ব সিসি টিভি ক্যামেরায় ও শিশুর মামার মুঠোফোনে ডিবি পুলিশের এই কর্মকাণ্ডের রেকর্ড রয়েছে।

তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক মো. ইকবাল হোসেন জানান, অভিযোগ সত্য নয়। এমনিতেই আদালত চত্বরে গিয়েছিলাম।

এই ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply