পঞ্চগড় পাক হানাদারমুক্ত দিবস আজ

|

পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

আজ ২৯ নভেম্বর। পঞ্চগড় পাকিস্তানী হানাদারমুক্ত দিবস। ৭১’র এই দিনে মুক্তিকামী জনতা কঠিন লড়াইয়ের মধ্যদিয়ে পঞ্চগড়কে পাক হানাদারমুক্ত করেছিলেন। মুক্তিকামী মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এই দিনটি আনন্দের।

প্রতি বছর জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে জাকজমকপূর্ণভাবে দিনটি পালন করা হলেও এবার করোনার কারণে খুবই সংক্ষিপ্ত আকারে দিনটি পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সকাল সাড়ে ৯টায় সার্কিট হাউজের সামনে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ ও করতোয়া সেতুর উত্তর পাড়ে শহীদ বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের পর পাকবাহিনী সারাদেশে আক্রমণ শুরু করলেও ১৬ই এপ্রিল পর্যন্ত পঞ্চগড় মুক্ত থাকে। পাকবাহিনী সড়ক পথে এসে ১৭ই এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টায় পঞ্চগড় দখল করে নেয়। পরবর্তীকালে জেলার চার থানা তারা দখলে নিলেও অমরখানায় চাওয়াই নদীর ওপর একটি ব্রিজ মুক্তিযোদ্ধারা ভেঙ্গে দেয়ার কারণে পাকসেনারা আর তেঁতুলিয়া ঢুকতে পারেনি।

মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়কালে তেঁতুলিয়া ছিল পাক হানাদারমুক্ত। মুক্ত অঞ্চল হিসেবে তেঁতুলিয়া সকল কর্মকাণ্ডের তীর্থভূমিতে পরিণত হয়। অস্থায়ী সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সভা তেঁতুলিয়াতেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

১লা নভেম্বর থেকে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় মিত্র বাহিনী যৌথভাবে পাকবাহিনীর ডিফেন্সের উপর হামলা চালায়। ফলে প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা মুক্ত হতে থাকে। মরণ কামড় হিসেবে মুক্তি ও মিত্রবাহিনী পর্যায়ক্রমে পাকবাহিনীর ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালিয়ে ২০শে নভেম্বর অমরখানা, ২৫শে নভেম্বর জগদলহাট, ২৬শে নভেম্বর শিংপাড়া, ২৭শে নভেম্বর পূর্ব তালমাসহ একইদিনে আটোয়ারী, মির্জাপুর, ধামোর, শক্রমুক্ত করে রাতেই তারা পঞ্চগড় সিও অফিস ও ঘাটিয়ারপাড়া এলাকায় ফ্রন্টলাইন গড়ে তোলেন।

২৮শে নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে পাকবাহিনীর উপর ঝড়ো আক্রমণ করে। এ আক্রমণে পঞ্চগড় শহরের পূর্বদিকে ডিফেন্স নিয়ে থাকা পাকবাহিনী টিকতে না পেরে টুনিরহাট দেবীগঞ্জ ভায়া ডোমার হয়ে কাঁচা রাস্তা ধরে সৈয়দপুর অভিমুখে পিছু হটতে থাকে।

ওইদিন রাতে মুক্তি, মিত্র, ট্যাংক ও পদাতিক বাহিনীর সম্মিলিত সাড়াশি আক্রমণে পরাজিত হয়ে পাক বাহিনী পঞ্চগড়ের মাটি ছেড়ে চলে গেলে ২৯শে নভেম্বর ভোরে পঞ্চগড় হানাদার মুক্ত হয়। এদিন পাকবাহিনীর সাথে ভয়াবহ যুদ্ধে ৪৮ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় শতাধিক মিত্র বাহিনীর সদস্য শহীদ হন। আহত হন অনেকে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply