মাদারীপুরে পদ্মায় স্পিডবোট দুর্ঘটনায় বাবা-মা ও দুই বোনকে হারানো শিশু মীম এখন আছেন নানাবাড়িতে। পরিবারের সবাইকে হারানোর পর নানির কোলই এখন মীমের একমাত্র ভরসাস্থল। শরীরের ক্ষতগুলো খানিকটা শুকালেও মনের ভেতরকার ক্ষত এখনও দগদগে। সারাক্ষণই ইতিউতি করে হারানো আপনজনদের খুঁজে ফিরছে তার চোখ। যারা সান্ত্বনা দিতে আসছেন তারাও ভাষা হারিয়ে ফেলছেন; কীভাবে সান্ত্বনা দেবেন এই অবুঝ শিশুকে!
বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে অনেকেই মীমের পাশে দাঁড়ানোর আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন বলছে, মীম যার কাছে থাকতে চায় তার কাছেই রাখা হবে। তাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মীমের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য কী করা যায়, সে বিষয়ে আমরা উচ্চমহলে কথা বলছি।’
নানা সবুর মিনা পেশায় কৃষক। মেয়ে-জামাই আর দুই নাতিকে হারিয়ে তিনি বাকরুদ্ধ। এখন মেয়ে-জামাইয়ের চিহ্ন বলতে আছে শুধু মীম। তাকে নিজের কাছেই রাখেতে চান নানা সবুর মিনা।
মীমকে কোনো সংস্থার তত্ত্বাবধানে দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এমন কিছু চিন্তা করছেন না। তিনি বলেন, মানুষ যাই বলুক, এমনটা চিন্তা করাও ঠিক হবে না। ও আমার কাছেই থাকবে। মীম বলেছে সে নানীর কাছেই থাকতে চায়।
মীমের ইচ্ছাতেই তাকে এখন রাখা হয়েছে খুলনার তেরখাদা উপজেলার পানতিতা গ্রামে। সে তার নানা-নানির তত্ত্বাবধায়নেই রয়েছে। তবে খোঁজ-খবর রাখছেন দাদাবাড়ির স্বজনরাও। মীমের মা-বাবা ও দুই বোনের দাফন হয়েছে একই উপজেলায় দাদাবাড়ি পারোখালি গ্রামে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (৩ মে) শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে পুরাতন কাঁঠালবাড়ি ঘাটের কাছে নোঙর করে রাখা বাল্কহেডের সাথে ধাক্কা লাগা স্পিডবোটের নিহত ২৬ জনের মধ্যে রয়েছে মীমের বাবা-মা এবং দুই বোনও।
Leave a reply