রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার জান্তাপ্রধানের নতুন নাটক

|

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরা নিয়ে নতুন করে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। চীনা টেলিভিশন ফিনিক্সের কাছে দেওয়া মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান অং হ্লাইংয়ের সাক্ষাৎকার থেকেই রয়টার্স এমন সন্দেহ করছে বলে জানায় বার্তা সংস্থাটি।

ফিনিক্সের পক্ষ থেকে মিন অং হ্লাইংয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিলো, সামরিক অভিযানের ফলে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের আবার রাখাইন রাজ্যে ফেরার অনুমতি দেওয়া হবে কিনা। এর উত্তরে জান্তাপ্রধান বলেন, ‘মিয়ানমারের আইনের সঙ্গে যদি সংগতিপূর্ণ না হয়, তাহলে এটা নিয়ে ভাবনার কী আছে? আমার মনে হয় না পৃথিবীতে এমন কোনো দেশ আছে, যারা নিজেদের আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়।’
আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর আহ্বানে তারা কোনো সাড়া দেবেন কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি মাথা নাড়েন।

২০১৭ সাল থেকে সামরিক অভিযানের ফলে মারা যায় হাজারো রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ। এছাড়া বাংলাদেশে পালিয়ে আসে অন্তত সাড়ে সাত লক্ষ মানুষ। সেই সময় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রধান ছিলেন মিন অং হ্লাইং। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে রোহিঙ্গারা কোনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী নয়। শত শত বছর ধরে রাখাইন অঞ্চলে বাস করা সত্ত্বেও এই জান্তাপ্রধান মনে করেন ১৯৪৮ সালে মিয়ানমারের স্বাধীনতার পর থেকেই এই জাতিগোষ্ঠীর উত্থান। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে আসা বহিরাগত।’

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন এবং দেশত্যাগে বাধ্য করার প্রসঙ্গে তৎকালীন স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চিও সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। তবে তিনি সেনাবাহিনীর এসব অভিযানকে বৈধতা দিয়ে বলেছেন, মূলত রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে করা অভিযানেই শরণার্থীরা বাংলাদেশে পালিয়েছে।

যদিও ক্ষমতা দখলের কয়েক দিনের মাথায় জান্তাপ্রধান বলেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া, যেটি অং সান সু চির সময়ে শুরু হয়েছিলো তা চলমান থাকবে, তবে এ বিষয়ে বাস্তবিক কোনো অগ্রগতি লক্ষ করা যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দেশটিতে গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভ চলছে। জান্তা সরকার কঠিন হাতে এই বিক্ষোভ দমন করায় সেখানে প্রতিনিয়তই সেনাবাহিনীর গুলিতে প্রাণহানির মত ঘটনা ঘটে চলেছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply