অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য যেন জার্মানির হ্যামিলনের মত ইঁদুরের রাজত্বে পরিণত হয়েছে। গল্পের শহরটির মতো বাঁশিওয়ালা নেই। তাই, ইঁদুরের উৎপাতে দিশেহারা রাজ্যটির বাসিন্দারা।
কোটি কোটি ইঁদুরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ স্থানীয়দের জীবন। নানা ধরনের টোপ দিয়েও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না এদের উৎপাত। পরিস্থিতিকে ‘ইঁদুরের মহামারি’ আখ্যা দিয়েছে রাজ্যটির বাসিন্দারা। ইঁদুরের উৎপাতে অন্তত একশ’ কোটি ডলারের ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা কৃষকদের।
সন্ধ্যা নামলেই গোপন আস্তানা থেকে বেরিয়ে আসে কোটি কোটি ইঁদুর। মূলত ফসলের ক্ষেত ও গোডাউনে ঘাঁটি গেড়েছে ইঁদুরের দল। স্থানীয়রা বলছে, এ প্রাণীটির এমন উৎপাত আগে আর দেখা যায়নি।
কৃষিখামার, দোকানপাট ও বাড়িঘর সবখানেই আতঙ্ক। কার্পেটের নিচে ও ঘরের সিলিংয়ে সবখানেই ইঁদুর। ইঁদুরের শব্দে থাকা দায়। এমনকি শহরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিন রোগীকেও কামড় দিয়েছে প্রাণীটি। এমনকি বিদ্যুতের তার খেয়ে ফেলায় পুড়ে গেছে একটি ঘর।
সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের কৃষকরা। কৃষকদের আশঙ্কা, ফসল তোলার আগেই গম ও বার্লি খেয়ে ফেলবে ইঁদুরের দল। এ মৌসুমেই এক বিলিয়ন ডলারের ফসল যেতে পারে এদের পেটে।
বাধ্য হয়ে ভারত থেকে ৫ হাজার লিটার নিষিদ্ধ বিষ আমদানির নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে এতে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। ঈগল, পোষা বিড়ালসহ যেসব প্রাণী ইদুর খায় সেগুলোও মরে সাফ হয়ে যেতে পারে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের কৃষিমন্ত্রী অ্যাডাম মার্শাল বলেন, খুব জটিল একটি পরিস্থিতিতে আছি। ইঁদুরের সংখ্যা কমানো না গেলে এবার বসন্তে বড় ধরণের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যায় পড়তে হবে। কৃষকদের বিনামূল্যে ওষুধ, ইঁদুর ধরার যন্ত্র সরবরাহ করছি। আগের চেয়ে চারগুণ শক্তিশালী বিষ আমদানির পরিকল্পনা করছি। এছাড়া উপায় নেই।
অস্ট্রেলিয় গণমাধ্যম বলছে, এক মৌসুমে ৫০০ বাচ্চা দিতে পারে এক জোড়া ইঁদুর। দেশটির এই সংকটকে রীতিমতো নাপাম বোমার সাথে তুলনা করা হচ্ছে। কেবল ভারি বৃষ্টিই এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে পারে বলে মনে করছে নিউ সাউথ ওয়েলসের বাসিন্দারা।
Leave a reply