মহাশূন্য গবেষণায় পরাশক্তি হওয়ার মিশনে নেমেছে চীন। কেবল বিপুল বিনিয়োগ নয়, মিশনের অংশ হিসেবে নিবিড় প্রশিক্ষণ চলছে নভোচারীদের। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৮০ কিলোমিটার উচ্চতায় থাকা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে গিয়ে মহাকাশ স্টেশনে থাকা তিন নভোচারীকে সাহস জুগিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। মহাকাশ স্টেশনে নভোচারীদের কার্যকলাপের ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করেছে বেইজিং।
প্রশিক্ষণ কতো কঠিন হতে পারে তার নমুনা মেলে চীনের এই মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে। এই
প্রশিক্ষণকালে থাকতে হবে মহাশূন্যের সম্পূর্ণ ভিন্ন আর প্রতিকূল পরিবেশে; লম্বা সময় ধরে চলে তার প্রস্তুতি।
মহাশূন্যে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। তাই ওজন যতই হোক ভাসতে হয় শূন্যে। পুরো প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে কঠিন ওজনহীনতার সাথে অভ্যস্ত হওয়ার এই চর্চা।
কঠিন চ্যালেঞ্জ নেয়ার প্রস্তুতি হিসেবে পানির নিচেও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন নভোচারীরা। শারীরিক, মানসিক শক্তিবৃদ্ধির পাশাপাশি প্রযুক্তিগত দিকগুলো যেন নখদর্পনে থাকে তাও নিশ্চিত করা হয়েছে আগেভাগেই।
নভোচারী ব্যবস্থার প্রধান নকশাকারক হুয়াং উইফেন বলেন, একজন নভোচারীর বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। তাই অভিজ্ঞতাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য তাদের মানসিক এবং শারীরিক শক্তি ধরে রাখাতে সবচেয়ে বেশি কাজ করা হয়েছে। ২০১০ সালেও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিলো এই নভোচারীদেরকে।
নিজেদের প্রথম মহাকাশ স্টেশনের নির্মাণ কাজে এক সপ্তাহ ধরে মহাশূন্যে আছেন চীনের তিন নভোচারী। দেশটির ইতিহাসে রেকর্ড তিন মাসের মিশন তাদের।
বেইজিং অবশ্য বলছে, কঠিন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নি হাইশেং, লিউ বোমিং ও তাং হংবো নির্বিঘ্নেই শেষ করবেন মিশন।
শেনঝু-১২ মহাকাশযানের কমান্ডার নি হাইশেং বলেন, স্বাভাবিক উপায়ে কাজ করতে পারছি এখানে। সবার শারীরিক অবস্থাও ভালো। নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি, তিয়ানহে মডিউলে খুবই স্বস্তিবোধ করছি। দেশের জন্য কাজ করতে পারায় আমরা গর্বিত।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং বলেন, কোর মডিউল তিয়ানহেতে আপনারাই প্রথম ব্যাচ। সুস্থতা কামনায় চীনের প্রতিটি নাগরিক আপনাদের জন্য প্রার্থনা করছে। আশা করবো সফল ভাবে কাজ শেষ করে ফিরে আসবেন আপনারা। এটি আমাদের জন্য বিশাল এক মাইলফলক।
তিন নভোচারীর মহাশূন্যে তিন মাস অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছে মহাকাশ গবেষণার নতুন শক্তি চীন। এ মিশন সফল হলে আগামীতে মহাকাশ স্টেশনে ছয় মাসের জন্য নভোচারী পাঠাতে চায় দেশটি। এর জোর প্রস্তুতি চলছে এখন থেকেই।
Leave a reply