মিয়ানমার থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিলো টেলিনর

|

মিয়ানমার থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিলো টেলিনর।

মিয়ানমার থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে নরওয়ে ভিত্তিক মাল্টিন্যাশনাল টেলিকম কোম্পানি টেলিনর। সাড়ে ১০ কোটি ডলারে লেবানিজ ইনভেস্টমেন্ট ফার্ম এমওয়ান গ্রুপের কাছে ইতোমধ্যেই কোম্পানির সমস্ত শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছে টেলিনর। গত ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের সামরিক জান্তা জন বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে সকল মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেয়। এ পরিস্থিতিতে দেশটিতে তাদের ব্যবসা বন্ধের ঘোষণা দেয় টেলিনর।

এক দশক আগে মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে ঝুঁকি নিয়ে যে কটি পশ্চিমা কোম্পানি মিয়ানমারে বিনিয়োগ করেছিল, তার অন্যতম টেলিনর। নরওয়ে ভিত্তিক টেলিনর মিয়ানমারে অন্যতম বড় বিদেশি বিনিয়োগকারী কোম্পানি।

সম্প্রতি এক বিবৃতিতে টেলিনর বলেছে, মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় এবং সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের কারণে টেলিনরকে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। বিক্ষোভ-জমায়েত ঠেকানোর জন্য অভ্যুত্থানের দিনই মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী টেলিনর ও অন্যান্য মোবাইল অপারেটরদের নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। তাৎক্ষণিক ভাবে এমন নির্দেশের সমালোচনা করলেও তা পালনে বাধ্য হয় টেলিনর।

এ ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যে নেটওয়ার্ক পুনরায় চালু করার অনুমতি মিললেও ১৫ মার্চের পর থেকে দেশটিতে সকল ধরণের মোবাইল নেটওয়ার্ক পুরোপুরি বন্ধ আছে। জাতিসংঘের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হাতে এ পর্যন্ত ৮৮০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এছাড়া সামরিক জান্তার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অন্তত ৫ হাজারেরও অধিক সাধারণ নাগরিক।

এছাড়া দেশটিতে অবস্থানরত অন্যান্য টেলিকম কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তাদের বিনা অনুমতিতে মিয়ানমার ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জান্তা সরকার। এছাড়া মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সাধারণ নাগরিকদের ওপর নজরদারির জন্য স্পাইং ডিভাইস ইনস্টল করতেও চাপ দেয়া হচ্ছে কোম্পানিগুলোকে। এমন পরিস্থিতিতে সঙ্কটে পড়েছে দেশটির টেলিকম ব্যবসা। গত ছয় মাসে মিয়ানমারে টেলিনরের লোকসান হয়েছে ৭৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। অথচ গত বছর কোম্পানিটির মোট আয়ের ৭ শতাংশ এসেছিল মিয়ানমার থেকেই।

টেলিনরের সিইও সিগভে ব্রেক বলেন, গত কয়েক মাসের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মিয়ানমারে কোম্পানির কর্মীদের নিরাপত্তা, জান্তা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ও কমপ্লায়েন্স বাস্তবায়ন টেলিনরের পক্ষে খুবই কঠিন হয়ে উঠেছে। কোম্পানির মালিকানা এম ওয়ান গ্রুপের কাছে গেলেও মিয়ানমারে টেলিনরের গ্রাহকদের সেবা বন্ধ হবে না বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply