নাটকগুলো একটু অন্যরকম হলে ভালো হতো: সাম্প্রতিক অভিযান প্রসঙ্গে অভিনেতা সাচ্চু

|

সোমবারের 'আমজনতা' অনুষ্ঠানে অতিথিরা।

প্রতারণার ঘটনায় চালানো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযানগুলোয় বেশকিছু সাদৃশ্য রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অভিনেতা শহিদুল আলম সাচ্চু। তিনি বলেন, খেয়াল করলে দেখা যাবে, সবগুলো ঘটনার মধ্যে বেশকিছু বিষয়ে সাদৃশ্য রয়েছে। তাদের বাসাগুলোতে অভিযানে একইরকমের জিনিস জব্দ করা হয়। নাটকগুলো একটু অন্যরকম হলে ভালো হতো। এগুলো সংশ্লিষ্টদের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তবে জঙ্গি দমনসহ অন্যান্য ঘটনার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশ কৃতিত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এ অর্জনকে আরও সুদৃঢ় করার আহ্বান তার।

সোমবার রাতে যমুনা টেলিভিশনের নিয়মিত টকশো ‘আমজনতা’য় অংশ নিয়ে তিনি এমন কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সমাজের নানাস্তরে সাম্প্রতিক আলোচিত প্রতারণার ঘটনাগুলো নিয়ে অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, বাংলাদেশ কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়, বাংলাদেশ বিশ্ব অর্থনীতি ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত একটি দেশ। সমাজব্যবস্থায় রাষ্ট্র এবং পরিবারের মধ্যে মানুষের বিবর্তন ঘটেছে। রাষ্ট্রীয় নিও লিবারেল অর্থনীতিতে মানুষের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ থাকে বাজার অর্থনীতির প্রতি। আর বাজারের সবচেয়ে সহজলভ্য বিষয় হলো রাজনীতি। তাই রাজনীতিতে ঢুকতে পারলে অসৎ মানুষেরা ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারে।

প্রতারণার দায়ে গ্রেফতারকৃত চিকিৎসক ডা. ঈশিতা প্রসঙ্গে এই অধ্যাপক বলেন, সমাজে যখন ঈশিতা মিথ্যাচার করে পার পেয়ে যাচ্ছিলেন, সবাই যখন তাকে বিশ্বাস করছিল, তখন তার পক্ষে মিথ্যাচার করে ক্ষমতার চর্চা করা আরও সহজ হয়ে গেল। ঈশিতা কোনো বিচ্ছন্ন ঘটনা নয়, এমন ঈশিতা প্রচুর রয়েছে। তিনি হেলেনা জাহাঙ্গীর, পাপিয়া, সাবরিনাদের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, তাদের ব্যাপারে সাধারণ একটি বিষয় হলো, সবাই কোনো না কোনোভাবে রাজনীতির সাথে জড়িত। 

এই আলোচনার সূত্র ধরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (উত্তর) শাখার যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, লিঙ্গীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে নয়, বরং অপরাধের অভিযোগ বা প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন। তিনি যুক্ত করেন, হেলেনা, সাবরিনা বা উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন পরিবারের ছেলেমেয়েরা নষ্ট হয়ে যাবার কারণ সামাজিক বিশৃঙ্খলা। যখন উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা বাসায় মাদকের পার্টি করে, তখন সামাজিক অবক্ষয় ঘটার একটা বড় সম্ভাবনা তৈরি হয়। হেলেনা জাহাঙ্গীর বা দর্জি মনিররা যে রাজনৈতিক সংগঠন খুলছেন, তাতে সমাজের অস্থিরতারই বহিঃপ্রকাশ ঘটছে।

পিয়াসাকে গ্রেফতারের পর যে মাদকের ব্যাপক প্রসারের প্রমাণ পাওয়া গেছে, তার দিকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে তিনি বলেন, একটা বাসার মধ্যে মদের বার, সীসার লাউঞ্জসহ মাদকের বড় আখড়া। সেখানে পিয়াসা একা থাকতেন। তিনি যুক্ত করেন, তাদের মতো প্রতারকদের দ্বারা সমাজের অভিজাত ব্যক্তিরা ব্ল্যাকমেইলের শিকার হন। তাদের ‘রাতের রানি’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সাম্প্রতিক এ সকল ঘটনা পরম্পরায় গণমাধ্যমের ভূমিকায় আরও স্পষ্টতা ও সচেতনতা থাকা জরুরি বলে মন্তব্য করেন বার্তা সংস্থা এপি’র বাংলাদেশ ব্যুরো প্রধান জুলহাস আলম। তিনি বলেন, গণমাধ্যমের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আমাদের ওনারসিপের প্যাটার্ন, আমাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা, এডিটোরিয়াল পলিসি যেগুলো জনগণকেন্দ্রিক হওয়া উচিত, কায়েমী স্বার্থবাদীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলে, রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী স্বার্থে পরিচালিত হলে নানা পেশাদারিত্বের পাশাপাশি নানা দুর্বলতা থেকে যায়। আমরা কোন বিষয়ে কাকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে তুলে আনছি সেই বিষয়টিতে নজর দিতে হবে।

আমজনতার পর্বটি দেখতে ক্লিক করুন 


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply