কান্না করায় দুই মাসের শিশুকে ছুড়ে ফেলে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করলো আয়া (ভিডিও)

|

শিশুটিকে আয়ার ছুঁড়ে ফেলা ও বালিশচাপার দৃশ্য ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়।

কান্না করাই কাল হলো সিলেট সরকারী ছোটমনি নিবাসের দুই মাস বয়সী এক শিশুর। তার কান্নায় বিরক্ত আয়া তাকে ছুড়ে ফেলে ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। ঘটনাটি ধরা পড়েছে সেখানকার সিসিটিভি ক্যামেরায়।

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং থেকে ভবঘুরে এক মানসিক প্রতিবন্ধী শিশু নাবিলকে প্রসব করলে গত ১২ জুন তাকে ছোটমনি নিবাসে দিয়েছিল স্থানীয়রা।

গত ২২ জুলাইয়ের ওই ঘটনায় শিশুটির মৃত্যু হয়। প্রথমে অপমৃত্যু মামলা করে কর্তৃপক্ষ। পরে তদন্তে নেমে সিসিটিভি’র ফুটেজ দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয়, আয়ার ছুড়ে ফেলা এবং বালিশ চাপা দেয়ায় শ্বাস নিতে না পেরে মারা যায় বাচ্চাটি। এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পেয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে আয়াকে। প্রাথমিকভাবে আয়া নিজের দোষ স্বীকার করেছে।

পুলিশের হাতে আসা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সিলেট সরকারি ছোটমনি নিবাসে ২২ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১০ টায় ২ মাস ১১ দিন বয়সী শিশু নাবিল আহমদ কান্নাকাটি করছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন শিশুদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকা। ক্ষিপ্ত আয়া শিশুটিকে বিছানা থেকে তুলে ছুড়ে ফেলেন পাশে থাকা বিছানায়। এরপর নাবিলের মুখের উপরে বালিশ ফেলে দেন।

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন

ঘটনার পর ২৩ জুলাই শিশুটি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মারা গেছে উল্লেখ করে কোতোয়ালী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে সিলেট সরকারি ছোটমনি নিবাস কর্তৃপক্ষ। ময়নাতদন্তের পর নাবিলের মরদেহ দাফন করা হয়। কিন্তু হত্যার বিষয়টি থেকে যায় আড়ালেই। সেই অপমৃত্যুর মামলা তদন্ত করতে গিয়েই বেরিয়ে আসে হত্যা রহস্য।

সিলেটে মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি আজবাহার আলী শেখ বলেন, বাচ্চাটাকে প্রথমে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর তাকে বালিশ চাপা দেওয়া হয়। ছুড়ে দেওয়ার ফলে বা বালিশ চাপায় যে কোনো এক কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।

তবে ছোটমনি নিবাস কর্তৃপক্ষ বলছে, এর আগে তারা কিছুই জানতেন না। তবে শিশু মৃত্যুর বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানায় তারা।

প্রতিষ্ঠানটির উপ-তত্ত্বাবধায়ক রুপন দেব বলেন, আমরা শুরুতে কিছু জানতাম না। ওই আয়াকে এখন দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন ডিজি স্যারের কাছে পাঠানো হবে। দুই একদিনের ভেতর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে ছোটমনি নিবাসের কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

/এস এন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply