ভাই বড় ধন রক্তের বাধন…! রাজধানীর পুরান ঢাকায় ক্যান্সার আক্রান্ত বড় ভাই আজিজের মৃত্যু সহ্য করতে না পেরে বুড়িগঙ্গা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন ছোটভাই আসাদ। বুড়িগঙ্গার তীর থেকে আসাদের লাশ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ।
রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) এই ঘটনা ঘটে, আজিজ ও আসাদ রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসেনি দালান এলাকার বাসিন্দা।
আসাদের খালা ইয়াসমিন বলেন, দুই ভাই আজিজ ও আসাদ হোসেনি দালান টিক্কা গলি এলাকায় থাকতো। বাসার নিচে ডালপুরি দোকান আছে তাদের। ওই দোকানের আয় দিয়ে তাদের সংসার চলত। তারা দু’জন বিবাহিত এবং তাদের সন্তান আছে। দু’ভাইয়ের মধ্যে অনেক মিল ছিল। সবকিছু নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করেই করত দুই ভাই। কয়েক মাস আগে বড় ভাই আজিজ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসকের কাছে নেয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় জানা যায় তার খাদ্যনালীতে টিউমার ও পরে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছে। কয়েকদিন যাবত তার অবস্থা ভাল ছিল না। এ অবস্থা দেখে ছোট ভাই আসাদ পরিবারের সবাইকে বলতো, ভাইয়ের কিছু হলে আমি আর বাঁচব না। তোরা আর বাঁচাতে পারবি না আমাকে। ভাইয়ের মরদেহ আমি কাঁধে নিতে পারব না। এটা কখনোই সহ্য করতে পারব না। আমি আত্মহত্যা করব।
খালা ইয়াসমিন আরও বলেন, শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে তার বড় ভাই আজিজ খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তা দেখে ছোট ভাই বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। এরই মধ্যে দুপুর তিনটার দিকে বড় ভাই মারা যায়। কিন্তু ছোট ভাই আসাদকে আমরা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। আজ (৫সেপ্টেম্বর) দুপুরে দিকে জানতে পারি বুড়িগঙ্গার পানিতে ভেসে ওঠে আসাদের মৃতদেহ। পরে পুলিশ তা উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
আসাদের পরিবার ও স্বজনদের ধারণা, বড় ভাইয়ের মৃত্যু সহ্য করতে না পেরে আসাদ আত্মহত্যা করেছেন।
সদরঘাট নৌ থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়ুম আলী সরদার জানান, খাদ্যনালীতে ক্যান্সার হওয়ায় শনিবার মারা গেছেন পুরান ঢাকার হোসেনি দালান এলাকার টিক্কা গলির বাসিন্দা মো. আবদুল আজিজ (৩৫)। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন ছোট ভাই মো. আসাদুজ্জামান আসাদ (৩২)। রোববার তার মরদেহ বুড়িগঙ্গা নদী থেকে উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
Leave a reply