নোয়াখালী শহরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা ও ধাওয়া চলাকালে এক পক্ষের তিন তরুণের হাতে অস্ত্র দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে অস্ত্র নিয়ে গুলি করা ও দৌড়ানোর দৃশ্যটি ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়।
তবে ভিডিওর অস্ত্রধারীদের নিজেদের লোক বলে স্বীকার করছেনা বিবাদমান কোনোপক্ষই, বরং পরস্পরকে দোষারোপ করেছেন তারা। ভিডিও দেখে অস্ত্রধারীদের শনাক্ত ও আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি দুপক্ষেরই।
এদিকে, এভাবে অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে গুলি ছোঁড়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা। তাদের আশঙ্কা, সন্ত্রাসীরা এভাবে প্রকাশ্যে অস্ত্রবহন ও গুলি ছুঁড়লে যে কেউই হতাহত হতে পারেন।
এ বিষয়ে নোয়াখালীর সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন গতকাল সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের বলেন, গুলি করা ও অস্ত্র হাতে দৌড়ানোর একটি ভিডিও পেয়েছি। ভিডিও দেখে অস্ত্রধারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শহরের জামে মসজিদ মোড় এলাকায় পাল্টাপাল্টি হামলা ও ধাওয়ার ঘটনা ঘটে নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিহাব উদ্দিন শাহিনের অনুসারীদের মধ্যে। সাংসদ একরামুল করিমের সমর্থকেরা ছিলেন জামে মসজিদ মোড়ের উত্তর দিকে, শিহাব উদ্দিনের অনুসারীরা ছিলেন জামে মসজিদের দক্ষিণ দিকে। ভিডিওতে দেখা যায়, অস্ত্রধারীরা গুলি করে দক্ষিণ দিকে পালিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে নোয়াখালী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শিহাব উদ্দিন শাহিন বলেন, গুলি কে করছে তা আমি জানি না। আমাদের লোককে ওসি সাহেদসহ পুলিশ গুলি করতে করতে তাড়া করে আমার বাসার সামনে নিয়ে আসে। গুলির ওই ভিডিও জেলা পুলিশ সুপার আমাকে পাঠিয়েছেন শনাক্ত করার জন্য। আমি এই দুষ্কৃতিকারীদের কাউকে চিনি না। আমার ধারণা প্রতিপক্ষ আমাদের সুনাম খর্ব করতে এদের ভাড়া করে এনেছে। এরা আমদের লোক হতেই পারে না, আমাদের লোকজন তো পিটুনি খেয়ে হাসপাতালে।
এদিকে, কথা বলার জন্য সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। পরে তার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদের (পিন্টু) সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ভিডিও দেখেছি, এই অস্ত্রধারীরা সদর পশ্চিমাঞ্চল থেকে এসেছে। এরা কার লোক তা সবাই জানে। এরা চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এদের নাম-পরিচয় সবাই জানে। আমাদের দাবি, প্রশাসন যেন অবিলম্বে এই সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনেন।
আলোচিত এ ভিডিওর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে নোয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, আমি কোনো ভিডিও পাইনি, আপনাদের কাছে আছে নাকি কোনো ভিডিও? এরপর সুধারাম থানার ওসি ভিডিওটি পেয়েছেন বলে জানানো হলে পুলিশ সুপার বলেন যে তিনি ওসির সাথে কথা বলবেন।
Leave a reply