মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি:
চেয়ারম্যানের সনদ অনুযায়ী ৪ মাস আগে মৃত্যু হয়েছে শফিকুল ইসলামের(৬৩)। এ কারণে বন্ধ হয়েছে তার বয়স্কভাতা। অথচ শফিকুল ইসলাম দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে ঘুরছেন বিভিন্ন দফতরে।
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শিবালয় মডেল ইউনিয়নের নবগ্রাম গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শফিকুল ইসলাম ওই ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার শারমিন বেগমের স্বামী।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম শুক্রবার (১ অক্টোবর) বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলাল উদ্দিন, স্ত্রী শারমিন বেগম ও ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ খানকে আসামী করে থানায় মামলা করেছেন।
ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি একটি ঋন উত্তোলনের জন্য শিবালয় উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে যান। এ সময় অফিসের কাগজপত্র পরীক্ষা করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসার জানান, তার নামের ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। প্রমাণ হিসেবে শিবালয় উপজেলা মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিনের স্বাক্ষরিত মৃত্যু সনদ দেখানো হয়। মৃত্যু সনদে উল্লেখ আছে, ৮ নং ইউপি সদস্যের সুপারিশে এই সনদ দেয়া হলো।এই মৃত্যু সনদের কারণে তার বয়স্ক ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানতে পারেন তিনি।
পরে শফিকুল ইসলাম মেম্বার-চেয়ারম্যানদের কাছে মৃত্যু সনদ দেয়ার বিষয়ে জানতে গেলে তারা রুঢ় আচরণ করে এবং হুমকি দেন।
তিনি বলেন, তার স্ত্রী মহিলা মেম্বার শারমিন বেগম দীর্ঘ দিন ধরে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরে তিনি বাড়ি ছাড়া। এই সুযোগে চেয়ারম্যান ও আরেক ইউপি সদস্যের সাথে যোগসাজসে তাকে মৃত বানিয়ে সম্পত্তি আত্মসাতের পাঁয়তারা করছেন। ফলস্বরূপ গত ২৬ মে অসুস্থ হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন মর্মে সনদ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন ‘আমি জীবিত আর আমাকে উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে কেন মৃত্যু দেখানো হলো আমি এর বিচার চাই।’
এ বিষয়ে শিবালয় মডেল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
শিবালয় উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. পলাশ হুসাইন জানান, শফিকুল ইসলাম নামে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড ছিল। পরবর্তীতে যাচাই বাছাইয়ের সময় বয়স কম ধরা পড়ায় বিধিমোতাবেক তার কার্ডটি বাতিল করা হয়।তবে তার মৃত্যুর সনদটি কিভাবে অফিসে আসলো, সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ কবির জানান, শফিকুল ইসলামকে জীবিত অবস্থায় চেয়ারম্যান-মেম্বাররা যোগসাজসে মৃত্যু সনদ দিয়েছেন। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে কারো কাছে জানালে তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। প্রাথমিক তদন্তে এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু হয়েছে।
Leave a reply