বৃহস্পতিবার ‘রাস্ট’ নামে একটি সিনেমার সেটে অস্ত্র চালানোর দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে হলিউড অভিনেতা অ্যালেক বল্ডউইনের ছোঁড়া গুলিতে নিহত হন সিনেমাটির চিত্রগ্রাহক, আহত হন পরিচালক। গোটা বিশ্ব স্তব্ধ হয়ে যায় নজিরবিহীন এ ঘটনায়।
সে ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে সামনে এলো ঘটনার পিছের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য। যুক্তরাষ্ট্র সময় শুক্রবার রাতে সর্বশেষ এক আদালত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এক সহকারী পরিচালক অসতর্কতাবশত কার্তুজভরা একটি অস্ত্র তুলে দেন অ্যালেক বল্ডউইনের হাতে।
স্যান্টা ফি আদালতে দায়েরকৃত একটি তল্লাশি ওয়ারেন্টের সুবাদে জানা গেছে, অ্যালেক বল্ডউইনকে অস্ত্রটি দেয়ার পর বলাও হয়েছিল যে এটি একটি ‘কোল্ড গান’, অর্থাৎ কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই এতে।
ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি। এমনকি অ্যালেক বল্ডউইনকে দেয়া হয়নি স্থানত্যাগের ক্ষেত্রেও কোনো নিষেধাজ্ঞা। তবে ঘটনার পর অ্যালেক বল্ডউইন মুষড়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ঘটনায় আহত হওয়া সিনেমাটির পরিচালক জো সুজা।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সকল ‘প্রপ গান’, রক্তাক্ত কাপড়সহ সকল আলামত ইতোমধ্যে সংগ্রহ করেছে।
এদিকে প্রশ্ন উঠেছে শ্যুটিং সেটে অস্ত্র ব্যবহারের নিরাপত্তার মতো গুরুতর বিষয়গুলো নিয়ে। ব্যবহৃত অস্ত্রে কার্তুজ কেন ছিল কিংবা থাকলেও সেটি কেন খালি অর্থাৎ গান পাউডার বিহীন ছিল না, সেটি নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
অবশ্য, যুক্তরাষ্ট্রে শ্যুটিং-এ সত্যিকারের বন্দুকের ব্যবহারও হয় কখনো কখনো। কিন্তু যেহেতু সিনেমাটির সহকারী পরিচালক নিশ্চিত করেছিলেন যে অস্ত্রটি ‘কোল্ড গান’ ছিল, তাই প্রশ্ন ওঠে, বিষয়টি আসলে নিছক অবহেলা, নাকি পরিকল্পিত। কিংবা যা-ই হোক, তাতে দায় কার।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচ ভেলেতে প্রকাশিত এক লেখায় জার্মান অস্ত্র বিশেষজ্ঞ অলিভার রাশ ঘটনাটির মধ্যে রহস্যের গন্ধ খুঁজে পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন। এমনকি দুর্ঘটনা একবারের ট্রিগার চাপায় ঘটে পারে, কিন্তু প্রথমবার ট্রিগার চাপার পর একজন গুলিবিদ্ধ হবার পরও আবারও কেন ‘ফায়ার’ করা হলো, সেই প্রশ্নটিও বিবেচনার দাবি রাখে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
১৯৩৩ সালে এমনই একটি শ্যুটিং সেটে ‘প্রপ গান’ কাণ্ডে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ব্রুস লির ছেলে অভিনেতা ব্রেন্ডন লি।
Leave a reply