মারিয়া হোসেন:
অবশেষে সাধারণ পরিবারের প্রেমিককেই বিয়ে করলেন জাপানের রাজকুমারী মাকো। এই বিয়ের ফলে তিনি তার রাজকীয় মর্যাদা হারিয়েছেন। জাপানের আইন অনুযায়ী রাজপরিবারের কোনো নারী সদস্য যদি সাধারণ কোনো নাগরিককে বিয়ে করেন তবে তিনি রাজকীয় মর্যাদা হারান। যদিও রাজপরিবারের পুরুষ সদস্যের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর নয়।
রূপকথায় রাজকুমারীর বিয়ে মানেই জাঁকজমক সমারোহ। রাজপুত্র আসে ঘোড়ায় চড়ে। বিয়ের আসরই যেনো হয়ে ওঠে মহাকাব্য। কিন্তু রূপকথা ছেড়ে জাপানি রাজকুমারী মাকো হাঁটলেন উল্টো পথে। রাজপুত্র নয়, মালা পরালেন একজন সাধারণ ‘প্রজার’ গলায়।
মাকো ও কোমুরোর প্রথম দেখা ২০১২ সালে। টোকিওর ইন্টারন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার সুবাদে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। পরিচয় রূপ নেয় পরিণয়ে। ২০১৭ সালে বাগদানও হয়ে যায়। পরের বছরই চার হাত এক হওয়ার কথা থাকলেও বাধ সাথে পারিবারিক টানাপড়েন। পিছিয়ে যায় আয়োজন। অবশেষে বিয়েটা মেনে নেন বাবা যুবরাজ ফুমিহিতো।
বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন ছিল রাজকুমারী মাকোর জন্য। জাপানি আইনে রাজপরিবারের নারী সাধারণ পুরুষকে বিয়ে করলে রাজকীয় মর্যাদা হারাবেন। পুরুষরা অবশ্য এ নিয়মের ঊর্ধ্বে! মাকো সেই প্রাসাদের জৌলুসময় জীবন ছেড়ে বেছে নেন ভালোবাসার মানুষকেই। ২৬ অক্টোবর বন্ধু কোমুরোর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
প্রিন্সেস মাকো’র স্বামী কেই কোমুরো বলেন, মাকোকে ভালোবাসি। মানুষের একটাই জীবন। এ জীবনটা ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে কাটিয়ে দিতে চাই।
মাকো-কোমুরোর বিয়ে জাপানের অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। তাদের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নিলেন নবদম্পতি। রাজকুমারীরা যখন রাজকীয় মর্যাদা হারান তখন এককালীন মোটা অঙ্কের অর্থ পেয়ে থাকেন। সেটাও নেননি মাকো। বিয়েতেও তাই ছিল না তেমন আয়োজন।
মাকো-কোমুরো জুটির প্রেম-বাগদান-বিয়ে নিয়ে গণমাধ্যমে চর্চা অনেক দিন ধরেই। বিয়ের পর তারা এসব থেকে দুরে সরে যেতে চাইছেন। আইনজীবী কোমুরোর কর্মস্থল যুক্তরাষ্ট্রে। হয়তো সেখানেই নতুন জীবন শুরু করবেন ‘সাবেক’ রাজকুমারী।
ইউএইচ/
Leave a reply