তিনটি বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেছেন তিনি। কিন্তু হাতে নিতে পারলেন না একটি ট্রফিও। এই অভাগার নাম কেন উইলিয়ামসন। ব্যাট হাতে ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম ঠান্ডা মাথার খুনি বলা চলে তাকে। দিনের পর দিন কঠিন পরিস্থিতিতে থেকে বের করে এনেছেন ম্যাচ। কিন্তু ফাইনালের মঞ্চে বড়ই অভাগা কেন।
২০১৫ সালের আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালে ৩৩ বলে ১২ রান করেছিলেন। দলও গুটিয়ে যায় মাত্রন ১৮৩ রানে। ফলাফল অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৭ উইকেটে হেরে প্রথমবারের মতো কাছে গিয়েও ছুঁয়ে দেখা হয়নি আরাধ্য ট্রফিটি। এরপর আবারও একটি ফাইনাল খেললেন ২০১৯ সালে। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ ফাইনালে স্বাগতিকদের বিপক্ষে করলেন ৫৩ বলে ৩০ রান। যেটি তার ফর্মের সাথে মানাসই বললে ভুল হবে। সেবারও আগে ব্যাট করে ২৪১ রানের মাঝারি সংগ্রহ করে কিউইরা। কিন্তু জিমি নিশাম, লকি ফার্গুসনদের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ে সেই রানেই ইংল্যান্ডের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপকে আটকে দেয় কেন বাহিনী। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সেটিও ড্র হওয়ায় ম্যাচে বেশি বাউন্ডারি হাঁকানোর অদ্ভুতুড়ে এক নিয়মের ফেরে বিজয়ী হয় স্বাগতিকরা। ট্রফি আর ছুঁয়ে দেখা হয়নি কেনের।
২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আরও একবার সুযোগ এলো কেনের সামনে। এবার সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে কুপোকাত করার পর ফাইনালে সেই অস্ট্রেলিয়া। অজিদেরও প্রথম টি-টোয়েন্টি শিরোপা জেতার ক্ষুধা। ফাইনালের মঞ্চে এবার আর জ্বলে উঠতে ভুল করলেন না কেন। ৩ ছয় ও ১০ চারে ৪৮ বলে ৮৫ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস খেললেন। মাঝপথে ম্যাচের কক্ষপথ থেকে ছিটকে যেতে থাকা দলকে একাই ফিরিয়ে আনলেন খেলায়। কিন্তু এবার আর অজি ব্যাটসম্যানদের রুখতে পারলেন না কিউই বোলাররা। ডেভিড ওয়ার্নার, মিচেল মার্শদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১ ওভার ১ বল বাকি থাকতেই ৮ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় অজিরা। ওয়ানডে বিশ্বকাপের রেকর্ড পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন হলেও টি-টোয়েন্টির ট্রফি এতদিন অধরাই ছিল অস্ট্রেলিয়ার। দ্বিতীয়বার ফাইনালে উঠে প্রথমবার শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলে তারা। আরও একবার প্রমাণ করলো গোটা আসরে যাই হোক সেমিফাইনাল ও ফাইনালে তারা ভিন্ন এক দল তারা।
অন্যদিকে, আরও একবার কাছে গিয়েও শিরোপা ছুঁতে না পারার বেদনা নিয়ে ফিরতে হলো কেনকে। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হলেও রঙিন পোশাকের কোনো সংস্করণে বিশ্বকাপ ট্রফি জয় হলো না এবারও। ক্রিকেটের ঋষি বলা হয় তাকে, কেন ভাবতেই পারেন, আর কত ধ্যান করা লাগবে একটি অধরা বিশ্বকাপের জন্য!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৭২/৪ (গাপটিল ২৮, মিচেল ১১, উইলিয়ামসন ৮৫, ফিলিপস ১৮, নিশাম ১৩*, সাইফার্ট ৮*, স্টার্ক ৪-০-৬০-০, হেইজেলউড ৪-০-১৬-৩, ম্যাক্সওয়েল ৩-০-২৮-০, কামিন্স ৪-০-২৭-০, জাম্পা ৪-০-২৬-১, মার্শ ১-০-১১-০)।
অস্ট্রেলিয়া: ১৮.৫ ওভারে ১৭৩/২ (ওয়ার্নার ৫৮, ফিঞ্চ ৫, মার্শ ৭৭*, ম্যাক্সওয়েল ২৮*, বোল্ট ৪-০-১৮-২, সাউদি ৩.৫-০-৪৩-০, মিলনে ৪-০-৩০-০, সোধি ৩-০-৪০-০, স্যান্টনার ৩-০-২৩-০, নিশাম ১-০-১৫-০)।
Leave a reply