সর্বকনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট পেলো চিলি, গ্যাব্রিয়েল বরিক গড়লেন ইতিহাস

|

বিজয় পরবর্তী ভাষণে গ্যাব্রিয়েল বরিক। ছবি: সংগৃহীত

চিলিতে ইতিহাস তৈরি করলেন সাবেক ছাত্রনেতা গ্যাব্রিয়েল বরিক। সবচেয়ে কম বয়সী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বামপন্থী এই নেতা পেয়েছেন জনগণের ম্যান্ডেট। গ্যাব্রিয়েল বরিকের এই জয়ের মাধ্যমে প্রগতিশীল বামপন্থীদের উত্থান হলো লাতিন দেশটিতে, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

৩৫ বছর বয়সী গ্যাব্রিয়েলের জয়ে আনন্দের জোয়ার বইছে কর্মী সমর্থকদের মধ্যে। রাস্তায় নেমে উল্লাসে মেতেছেন সাধারণ জনতাও। রোববারের (১৯ ডিসেম্বর) লড়াইয়ে প্রায় ৫৬ শতাংশ ভোট দখলে নিয়েছেন বামপন্থী গ্যাব্রিয়েল বরিক। আর প্রতিদ্বন্দ্বী কট্টর ডানপন্থী হোসে অ্যান্তোনিও কাস্তর ঝুলিতে পড়েছে ৪৪ শতাংশের মতো ভোট।

চিলিবাসী বলছে, এটা জনগণের বিজয়। বহু বছর ধরে অবিচার, অরাজকতা চলেছে। রাজনীতিতে একটা বিপ্লব দরকার ছিল। বরিকের উপর ভরসা ছিল। তিনি এই ফলাফলের যোগ্য।

গ্যাব্রিয়েল বরিকের সমর্থকদের উল্লাস। ছবি: সংগৃহীত

আইন বিভাগের সাবেক ছাত্র গ্যাব্রিয়েল বরিক ১০ বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়েছেন ছাত্র আন্দোলনে। তিনি ছিলেন সান্টিয়াগোর ইউনিভার্সিটি অব চিলি’র স্টুডেন্ট ফেডারেশনের নেতা। ২০১১’তে উন্নত শিক্ষা নিশ্চিতের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে প্রথম আলোচনায় আসেন তিনি। ২০১৪ সালে ২৮ বছর বয়সে নিম্ন কক্ষের আইনপ্রণেতা হিসেবে ন্যাশনাল কংগ্রেসের সদস্য হন গ্যাব্রিয়েল। এবারের নির্বাচনের শুরুর দিকে তাকে দেখা হয়েছিল ডার্ক হর্স হিসেবে। তবে প্রগতিশীল বামপন্থী অবস্থানের কারণে দ্রুত অর্জন করেন জনপ্রিয়তা।

আরও পড়ুন: দিল্লিতে তাপমাত্রা ৩.২ ডিগ্রি-কলকাতায় ১১, ঠাণ্ডায় কাঁপছে ভারত

অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ কমিউনিস্ট পার্টির ড্যানিয়েল হাদুয়েকে হারিয়ে বিশাল বামপন্থী জোটের নেতৃত্ব পান গ্যাব্রিয়েল। বৈষম্য আর প্রচলিত বাজার অর্থনীতির বিরুদ্ধে কথা বলে অর্জন করেন জনগণের আস্থা। বিজয় পরবর্তী ভাষণেও তিনি দেন জনগণের সামাজিক অধিকার রক্ষার অঙ্গীকার।

ছবি: সংগৃহীত

চিলির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বরিক বলেন, আমাদের সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জ। কথা দিচ্ছি, গণতন্ত্র রক্ষা, ঐক্য প্রতিষ্ঠা আর জনগণের প্রয়োজনকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেবো। যে আস্থা আমার উপর রেখেছেন তা রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।

হার মেনে নিয়ে গ্যাব্রিয়েলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ৫৫ বছর বয়সী হোসে অ্যান্তনিও কাস্ত। পরাজিত এই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বলেন, স্বচ্ছ জয় পেয়েছেন বরিক। চিলির সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিক তার উপর আস্থা রেখেছে। আশা করছি খুব ভালোভাবে সরকার পরিচালনা করবেন তিনি। মৌলিক আদর্শে ভিন্নতা থাকলেও এক হয়ে জাতিকে সহায়তা করতে চাই।

চিলির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভেনেজুয়েলা, আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, পেরু, উরুগুয়েসহ লাতিন দেশগুলোর নেতারা। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে আশাবাদ জানিয়েছেন কিউবা ও কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট।

আগামী মার্চে দায়িত্ব নেবেন গ্যাব্রিয়েল বরিক। ১৯৯০’তে গণতন্ত্র ফেরার পর থেকে মধ্যপন্থীরা শাসন করে আসছে চিলিতে। গ্যাব্রিয়েলের জয়ের মধ্য দিয়ে প্রগতিশীল বামপন্থীদের উত্থান হলো আন্দিয়ান দেশটিতে।

আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী হলেন লিজ ট্রাস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply