বউয়ের সাথে রাগ করে বানানো বিরিয়ানি চপে ভাগ্য খুলেছে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার জাহাপুর এলাকার সজিবের। করোনার প্রভাবে সর্বশান্ত হয়ে যাওয়া সজিব বিরিয়ানি চপ বিক্রি করে গত ৪ মাসে ৪ লাখ টাকা দেনা শোধ করে স্বাবলম্বী এখন। সজিবের বিরিয়ানি চপ খেতে ফরিদপুরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তো বটেই যশোর, গাজীপুর, চট্টগ্রাম থেকেও ভ্রমণ পিপাসু ও খাদ্য রসিকরা ভিড় করছেন।
জানা যায়, করোনার আগে পাটের ব্যবসার পাশাপাশি ছোট একটা হোটেলও ছিল তার। কিন্তু লকডাউনের ফলে ব্যবসায় লস তো হয়ই উল্টো ৭ লক্ষ টাকা দেনা হন। পরিবার নিয়ে যখন দিশেহারা সজিব ঠিক তখনই ঘটে এক অদ্ভুত ঘটনা।
চার-পাঁচ মাস আগে এক রাতে সজিবের ইচ্ছে হয় বিরিয়ানি খাওয়ার। তাই বাজার থেকে ২ কেজি মুরগি কিনে বউকে দিয়ে বলেন বিরিয়ানি বানাতে। রাত হয়ে যাওয়ায় বউ বিরিয়ানি তো করেই নি বরং স্বামীকে বকাঝকা করেন। রাগ করে সজিব নিজেই যান বিরিয়ানি রান্না করতে।
কিন্তু বিরিয়ানি না হয়ে ভর্তা টাইপের কিছু একটা হয়। পরদিন রান্না ওই বিরিয়ানি দিয়ে চপ বানিয়ে আশে পাশের মানুষদের খাওয়ান সজিব। সবাই যখন এই চপ খেয়ে স্বাদ পান, তখনই তার মনে আশে এই বিরিয়ানি চপের ব্যবসার।
কাকতালীয় ভাবে ২ কেজি মুরগি দিয়ে শুরু করা সজিবের দোকানে এখন প্রতিদিন ৪০ কেজি মুরগির প্রয়োজন হয়। চপ বানানোর আগে সজিব আগে বিরিয়ানি রান্না করেন। ৪০ কেজি মুরগি, ৩ কেজি চাল, ৫ কেজি আলু সাথে ২১ রকমের মশলা দিয়ে তিনি এই বিরিয়ানি রান্না করেন।
বাড়ির অদূরে জাফরাকান্দি মোড়ে বিকেল ৩ টা থেকে শুরু করেন সেই বিরিয়ানির চপ বানানো। বিরিয়ানি চপ ছাড়াও সজিবের দোকানে পাওয়া যায়, কবুতরের চপ, কোয়েল পাখির চপ ও মুরগির ফ্রাই।
ওই দিন স্বামীকে বিরিয়ানি রান্না করে না খাওয়ালেও এখন প্রতিদিনই স্বামীকে তার কাজে সাহায্য করছেন সজিবের স্ত্রী। সকালে মাংস বানানো, ধোয়া থেকে সব কাজ গুলোই করে দেন তিনি।
জনপ্রিয় ও সুস্বাদু এই বিরিয়ানি চপ খেতে দূর দূরান্ত থেকে আসা খাদ্য রসিকরা বলেন, এই চপটি সব জায়গায় পাওয়া যায় না। স্বাদটাও ভিন্ন রকমের তাই এখানে আসা।
ফরিদপুর জেলা সমাজসেবার উপ পরিচালক এএসএম আলী আহসান বলেন, ব্যতিক্রমী এই চপ খুবই সুস্বাদু। সজিব চাইলে ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর জন্য সমাজ সেবা থেকে স্বল্প সুদে ক্ষুদ্র ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।
/এনএএস
Leave a reply