যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ইউক্রেনীয় ইহুদিদের ফিলিস্তিনে আশ্রয় দেবে ইসরায়েল

|

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে হাজার মাইল দূরের অঞ্চল ফিলিস্তিনে। কারণ, সংঘাতকবলিত ইউক্রেনের ইহুদিদের পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। আর সেজন্য দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে প্রায় ১ হাজার নতুন বসতি নির্মাণের পরিকল্পনাও করেছে দেশটি। বিশ্লেষকরা বলছেন, মানবিক দিক বিবেচনায় নয় বরং দখলদারিত্ব আর জনসংখ্যায় আধিপত্য বাড়াতেই এ উদ্যোগ তেল আবিবের। আগ্রাসনের শিকার হয়ে ইউক্রেন ছাড়া শতাধিক মানুষ এরইমধ্যে আগ্রাসী-দখলদারের ভূমিকায় ফিলিস্তিনে।

রুশ আগ্রাসন থেকে বাঁচতে যখন পোল্যান্ড, রোমানিয়ায় আশ্রয় নিচ্ছে হাজারও ইউক্রেনীয়, তখন আকাশপথে ১২শ মাইল পাড়ি দিয়ে ইসরায়েলে পৌঁছেছে একশজনের একটি দল। এদের সবাই ইহুদি।

কিয়েভ আর ওডেসা থেকে দুটি ফ্লাইট গেছে ইসরায়েলে। ইউক্রেনে ইহুদি আছেন প্রায় ৪ লাখ। আপাতত তেল আবিবের পরিকল্পনা ১০ হাজার ইহুদি ইউক্রেনীয়কে আশ্রয় দেয়া। সে লক্ষ্যে নতুন বসতি নির্মাণের ছকও কষে ফেলেছে তারা। আর আগ্রাসনে ইউক্রেন ত্যাগ করা লোকজন এমন সিদ্ধান্তকে দেখছেন সুযোগ হিসেবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন সংকট থেকে ফায়দা নিতে চাইছে ইসরায়েল। তাইতো যুদ্ধের শুরুতেই ইউক্রেনীয় ইহুদিদের আশ্রয় দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা। দ্রুত প্রবেশ নিশ্চিতে দাফতরিক প্রক্রিয়াও সহজ করার ঘোষণা দিয়েছে তেল আবিব। ইসরায়েলে অভিবাসন প্রত্যাশী ইহুদিদের জন্য পোল্যান্ড, রোমানিয়া, মলদোভা, হাঙ্গেরিতে খোলা হয়েছে আবেদনের কেন্দ্র।

মানবিক কারণ নয় বরং ফিলিস্তিনিদের ওপর আধিপত্য বিস্তারেই যে তেল আবিবের এ বন্দোবস্ত তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ইসরায়েলের ইতিহাসই হলো ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে অবৈধ বসতি নির্মাণের। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরেই দখলকৃত অঞ্চলে হাজারখানেক নতুন বসতি নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল।

১৯১৮-তে ব্রিটিশরা দখল নেয়ার আগে ফিলিস্তিনে ইহুদি জনগোষ্ঠী ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। যা চার বছরের মধ্যে তিনগুণ বেড়ে যায়। পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষকতায় ইহুদির সংখ্যা ২৭ শতাংশে পৌঁছে যায় ১৯৩৫ সালের মধ্যেই।

বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ইহুদিদের নিয়ে ১৯৪৮ সালে গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠা করা হয় ইসরায়েল রাষ্ট্রকে। বসতি থেকে উচ্ছেদ করা হয় সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনিকে। ইহুদিদের ঢলের সাথে বাড়তে থাকে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনির সংখ্যা। ৭২ বছর ধরে জর্ডান, সিরিয়া, মিসর, লেবানন ও ফিলিস্তিনের ৫৮টি শিবিরে মানবেতর দিন কাটছে প্রায় ৬০ লাখ ফিলিস্তিনির।

ইসরায়েলের আইন অনুযায়ী পূর্বসূরিদের কেউ কোনোদিন সেখানে পা না রাখলেও বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের ইহুদিরা নাগরিকত্ব পেতে পারে দেশটির।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply