দুর্যোগ ছাড়াই আকাশ থেকে চীনা বিমানের আছড়ে পড়ায় হতবাক বিশ্লেষকরা

|

ছবি: সংগৃহীত

প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ ছাড়াই হঠাৎ আকাশ থেকে যেভাবে আছড়ে পড়েছে চীনা বিমানটি, তাতে হতবাক হয়েছে বিশ্লেষকরা। দুর্ঘটনার কারণ ভালোমতো খতিয়ে দেখার তাগিদ দিয়েছে তারা। আর এই ঘটনায় মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের ওপর চাপ বাড়ছে। এর আগে, ‘বোয়িং সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স’ নিয়েও ওঠে ত্রুটির অভিযোগ। খবর বিবিসির।

বোয়িংয়ের সচল বিমানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত সেভেন থ্রি সেভেন এইট হান্ড্রেড। নেক্সট জেনারেশনের এই মডেলের সাড়ে চার হাজারের বেশি বিমান চালু রয়েছে বিশ্বজুড়ে, যার অন্যতম প্রধান বাজার চীন। এই মডেলের প্রায় ১২শ’ এয়ারক্রাফট রয়েছে দেশটির।

ছবি: সংগৃহীত

নব্বই দশকের শেষ দিকে বাজারে আসার পর এ পর্যন্ত সেভেন থ্রি সেভেন এইট হান্ড্রেড মডেলের প্রায় ৫ হাজার বিমান সরবরাহ করেছে বোয়িং। দুই দশকের বেশি সময় ধরে বিমানটির হাজার হাজার ফ্লাইট পরিচালনা করেছে সব বড় বড় এয়ারলাইনস। এছাড়া মডেলটির নিরাপত্তা রেকর্ডও ভালো বলেই বিবেচিত হয়েছে। অথচ হঠাৎই ঘটলো এমন দুর্ঘটনা।

দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় কুনমিং থেকে গুয়াংঝুতে পৌঁছাতে বিমানটির সময় লাগার কথা ছিল ২ ঘণ্টার মতো। ফ্লাইট রাডার টোয়েন্টি ফোরের তথ্য বলছে, দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে ২৯ হাজার ১শ’ ফুট ওপর দিয়ে যাচ্ছিল বিমানটি। ২ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে হঠাৎই নেমে যায় ৯ হাজার ৭৫ ফুট উচ্চতায়। মাত্র ২০ সেকেন্ড পরই নামে ৩ হাজার ২২৫ ফুট উচ্চতায়। এভাবে ধাপে ধাপে উচ্চতা কমে যাওয়ার পেছনে কী কারণ থাকতে পারে, তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত। মেলিয়াস রিসার্চের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রবার্ট স্পিনগার বলেন, বিধ্বস্ত হবার সময় আবহাওয়া ভালো ছিল। নকশার নাকি মানবসৃষ্ট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটা তদন্তের পরই বোঝা যাবে। চীনে কিন্তু ছয় বছর ধরে চলছে এটি। এই মডেলের বিমানের যাত্রাও শুরু হয় ২৪ বছর আগে।

ছবি: সংগৃহীত

বোয়িংয়ের এই মডেলেরই পরবর্তী ভার্সন সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স। ২০১৮ ও ১৯ সালে এই সিরিজের দু’টি বিমান বিধ্বস্ত হয় ইন্দোনেশিয়া ও ইথিওপিয়ায়। তখন থেকেই এর মৌলিক নকশা নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। আইনি জটিলতা, শত কোটি ডলার জরিমানা, মহামারিসহ বড় বড় সংকট কাটিয়ে মাত্রই চাঙা হয়ে উঠেছিল বোয়িংয়ের বাজার। চীনের দুর্ঘটনায় আবারও বড় ধরনের চাপে রয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি। রবার্ট স্পিনগার বলেন, ম্যাক্সের মূল সিস্টেম থেকে এইট হান্ড্রেড মডেল আলাদা। খুব শিগগিরই চীনের বাজারে এটির প্রবেশ করার বন্দোবস্ত চলছিল। এরমধ্যেই এমন দুর্ঘটনা। এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা পিছু হটবে, সেটাই স্বাভাবিক।

এরই মধ্যে বোয়িং সেভেন থ্রি সেভেন-এইট হান্ড্রেড বিমান চলাচল স্থগিত করেছে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনস, যাদের কাছে এই মডেলের ১০৯টি বিমান রয়েছে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে বোয়িংয়ের শেয়ারের দাম কমে যায় ৫ শতাংশ।

আরও পড়ুন: ১৩৩ যাত্রী নিয়ে চীনা বিমান বিধ্বস্ত

এম ই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply