সেচ না পেয়ে আত্মহত্যা বুঝিয়ে দেয় কেমন আছে কৃষক

|

বরেন্দ্রের লাল মাটিতে বর্গা নেয়া জমি। ফসল ফলাতে দরিদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ ঋণ নেন। অথচ সেচের জন্য বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নলকূপ অপারেটরের কাছে দিনের পর দিন ঘুরেও বঞ্চিত হতে হয়। সে সময় যখন মাঠ ফেটে চৌচির হতে দেখেন চাষি, তখন শঙ্কা জাগে ফসল নষ্ট হয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় সেচের পানি না পেয়ে দুই কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনা তুলে এনেছে সরকারি সংস্থার সেচ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় পর্যায়ে বঞ্চনার এমন করুণ চিত্র, আর স্পষ্ট করেছে, প্রকৃতপক্ষে কেমন আছে এদেশের কৃষক।

তিন দিন ধরে জ্বলেনি চুলা। ঘরে নেই চাল। আছে কেজি দশেক ধান। দিন এনে দিন খাওয়া সংসারে টিকে থাকার স্বপ্ন ছিল এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বর্গা জমিতে চাষ করা ধান। দিনের পর দিন ঘুরেও সেচের ব্যবস্থা করতে না পেরে শেষ অবলম্বনটুকু বিবর্ণ হতে দেখে আর স্থির থাকতে পারেনি গোদাগাড়ির নিমঘুটু গ্রামের অভিনাথ মার্ডি ও তার চাচাতো ভাই রবি মার্ডি। বুধবার চাষাবাদের জমিতেই তারা করেন আত্মহননের চেষ্টা। সেদিনই নিজ বাড়িতে মারা যান অভিনাথ মার্ডি। তিন দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে শুক্রবার রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান রবি মার্ডিও।

এ অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা বলছেন, পানি শুকিয়ে ধানী জমি বিবর্ণ হওয়ার বঞ্চনা নিত্য দিনের।

এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছে নিহতের স্বজনরা। গোদাগাড়ী উপজেলার ঈশ্বরীপুর মাঠে ধানের জমিতে পানি সেচ দেওয়ার দায়িত্বরত বিএমডিএর নলকূপ অপারেটর শাখাওয়াতের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়। পুলিশ বলছে তারা সঠিক তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।

আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় কমিটির আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর প্রান্তিক এই মানুষদের বঞ্চনার বিষয়টি নিয়ে সরকারকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।

তবে ডিপ টিউবওয়েল অপারেটর শাখাওয়াত হোসেন নিহতদের পরিবারের অভিযোগকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। এমনকি ওই কৃষকরা মদ্যপান করে মারা গেছেন বলেও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন তিনি।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply