ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন থামার বিন্দুমাত্র লক্ষণ নেই। প্রতিনিয়ত রুশ বাহিনীর হামলায় দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। এরইমধ্যে উদ্বেগজনক তথ্য জানালো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও)। জানিয়েছে, রুশ হামলায় খাদের প্রান্তে ইউক্রেনের স্বাস্থ্য কাঠামো। বিনা চিকিৎসায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩ হাজারের বেশি মানুষ।
ডব্লিওএইচও এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির ৪০ শতাংশ মানুষ ভুগছে শ্বাসকষ্ট-ডায়াবেটিসের মতো রোগে। কিন্তু যুদ্ধের ভয়াবহতার শিকার বেশিরভাগ হাসপাতাল ও চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপ অঞ্চলের পরিচালক হানস ক্লগ বলেন, দীর্ঘ দু’মাসের যুদ্ধের পরিণতি সাংঘাতিক। বিনা চিকিৎসায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩ হাজার ৩৮২ বেসামরিক ইউক্রেনীয়। যাদের মধ্যে ২৩৫ জনই শিশু।
এরমাঝেও অগ্নিদগ্ধ, গুলিবিদ্ধ এবং ধারালো অস্ত্রে আঘাতপ্রাপ্তদের চিকিৎসা করছে কয়েকটি হাসপাতাল। তবে যক্ষা, ডায়াবেটিস, করোনা ও ক্যান্সার রোগীরা মোটেও সেবা পাচ্ছেন না। জাতিসংঘের হিসেবে এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত।
হানস ক্লগ জানায়, রুশ হামলার শিকার হয়েছে ইউক্রেনের অন্তত ২০০ হাসপাতাল ও চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র। ইউক্রেন ভূখণ্ডে ২০০ হাসপাতাল ও চিকিৎসা সেবাকেন্দ্রে হামলার তথ্য নথিভূক্ত করেছে ডব্লিওএইচও। সাম্প্রতিক ইতিহাসে স্বাস্থ্য কাঠামোর ওপর এতোটা ভয়াবহ আগ্রাসন আর কোথাও হয়নি। এর মাধ্যমে ভরসার শেষ আশ্রয়টুকুও হারিয়েছেন মানুষ। এটা স্পষ্টভাবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন।
ইউক্রেনের স্বাস্থ্য কাঠামোর ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দাও জানিয়েছে ডব্লিওএইচও। এটিকে ইউরোপের কালো অধ্যায়ের সাথে তুলনা করেছে সংস্থাটি।
ডব্লিউএইচও’র ইউরোপ অঞ্চলের এ পরিচালক বলেন, ইউরোপীয় অঞ্চলের জন্য এটি কালো অধ্যায়। মহাদেশটির মানুষ চিন্তার বাইরে দুর্ভোগ দেখছে। গেলো দু’বছর করোনা মহামারির সাথে অদৃশ্য লড়াই করেছি আমরা। এখন যুদ্ধের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা আর চরম মানবিক বিপর্যয় আমাদের নিত্যসঙ্গী। যা গেলো ৭০ বছরের মধ্যে রেকর্ড।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। জাতিসংঘের আশঙ্কা, হিসাবের চেয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কয়েক হাজার গণনার বাইরে রয়েছে। প্রাণভয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোয় আশ্রয় নিয়েছেন ৮০ লাখের বেশি ইউক্রেনীয়।
/এমএন
Leave a reply