গাইতে গাইতেই চলে গেলেন বলিউডের তারকা গায়ক কৃষ্ণকুমার কুনাথ (৫৩)। ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’ সিনেমার ‘তাড়াপ তাড়াপ’ এর মতো সর্বভারতীয় হিট গান দিয়ে শুরু যার সিনেমায় প্লেব্যাক, তিনিই চলে গেলেন কলকাতার নজরুল মঞ্চে ‘হাম রাহে ইয়া না রাহে কাল’ গাইতে গাইতে। এটাই যে শেষ গান তার কে জানতো! কৃষ্ণের গানের শেষ সাক্ষী হয়ে রইলো সুরের শহর কলকাতা।
মঙ্গলবার (৩১ মে) কলকাতার নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার পর আকস্মিক অসুস্থ হয়ে পড়েন কৃষ্ণ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার প্রথম সারির একটি বেসরকারি হাসপাতালে। আর রাত সাড়ে ৯টায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করলেন তাকে। চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন কৃষ্ণ। আকস্মিক এমন মৃত্যুর কারণ জানতে ইতোমধ্যেই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে জনপ্রিয় এ গায়কের দেহ।
১৯৬৮ সালের ২৩শে আগস্ট দিল্লির এক হিন্দু মালয়ালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন কৃষ্ণকুমার কুন্নথ। নয়া দিল্লির পথে ঘাটেই বেড়ে ওঠা তার। স্কুলের পড়াশোনা দিল্লির মাউন্ট সেন্ট ম্যারিস স্কুলে, এরপর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিরোরি মাল কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে একটি হোটেলের বিপণন নির্বাহী হিসেবে কাজ করেন কিছুদিন। এরপর ১৯৯৪ সালে পাড়ি জমান মুম্বাইয়ে। বলিউডের ব্যাকগ্রাউন্ড আর্টিস্ট হিসেবে কাজ শুরুর আগে তিনি কণ্ঠ দেন অন্তত ৩৫০০ বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলে। আর ১৯৯৬ সাল থেকে শুরু করেন সিনেমায় প্লে ব্যাক করা। এরপরের গল্পটা শুধু সাফল্যের।
হিন্দি, বাংলা, তেলুগু, মালয়ালম, কন্নড়, মারাঠি, গুজরাটি ও তামিলসহ ১১টি ভাষার চলচ্চিত্রে গান গেয়ে সমগ্র ভারতজুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেন কৃষ্ণ। খুবই স্পষ্ট ও শ্রুতিমধুর কণ্ঠ, কণ্ঠের বৈচিত্রতা এবং স্বরগ্রাম অনুযায়ী গায়কীর জন্য অল্প সময়ের মধ্যেই সমগ্র ভারত উপমহাদেশজুড়ে খ্যাতি লাভ করেন কখনই সঙ্গীতের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক তালিম গ্রহণ না করা কেকে। এরপর শুধু পরিশ্রম আর গলার জাদু ছড়িয়েই ভারতবাসীর মন জয় করেছেন সঙ্গীতের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাবিহীন এ গায়ক।
তার জনপ্রিয় গানের তালিকা অনেক দীর্ঘ। উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে- তাড়াপ তাড়াপ, জারা সা, আখো ম্যায় তেরি আজাবসি আদায়ে, খুদা জানে, কেয়া মুঝে পেয়ার হ্যায়, দিল ইবাদাত, তুঝে সোচতা হু, পিয়া আয়ে না, তু হি মেরি সাব হ্যায়, মেরে বিনা…আরও অসংখ্য গান।
/এসএইচ
Leave a reply