স্পেনের মাদ্রিদে ন্যাটো সম্মেলনজুড়ে নিরাপত্তা ইস্যুতে একটাই প্রতিপক্ষ, রাশিয়া। গোটা ইউরোপের হুমকিদাতা হিসেবে উঠে আসছে অভিন্ন নাম, ভ্লাদিমির পুতিন। তাই মস্কো আর পুতিনকে ঠেকাতেই উঠে আসে এ সামরিক জোটের মহাপরিকল্পনা।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরো-আটলান্টিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতায় রাশিয়া সবচেয়ে বড় হুমকি উল্লেখ করে আরও শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলেন ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশগুলোর নেতারা। ইউরোপে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোসহ বড়সড় পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অবশ্য মস্কোর জন্য হুমকি তৈরি করলে সমুচিত জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
২য় বিশ্বযুদ্ধের পর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবার সবচেয়ে বড় উদ্যোগ নিয়েছে ন্যাটো। মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ নিজেই জানিয়েছেন, ন্যাটো সেনাবহরে এত বড় আকারে পুনর্বিন্যাস হয়নি আগে। ১১ পৃষ্ঠার নতুন কৌশলগত পরিকল্পনায় তুলে ধরা হয় ভবিষ্যৎ হুমকি মোকাবেলায় কর্মপন্থা।
ন্যাটো মহাসচিবের সাথে বৈঠকে নতুন করে সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েনের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জানান, পোল্যান্ডে হবে স্থায়ী একটি সেনা হেডকোয়ার্টার। স্পেনে নতুন দু’টি ডেস্ট্রয়ার, ব্রিটেনে আরও দু’টি এফ থার্টি ফাইভ স্কোয়াড্রন পাঠানোর ঘোষণাও দেন। পোল্যান্ড, রোমানিয়াসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশের ঘাঁটি নিয়েও নতুন পরিকল্পনার কথা জানান বাইডেন।
জো বাইডেন বলেন, ইউরোপের পরিবর্তিত নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র। আমাদের সমন্বিত নিরাপত্তার স্বার্থে ন্যাটোর সামরিক সক্ষমতা বাড়ানো হবে। ন্যাটো অঞ্চলের প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবো। নিশ্চিত করতে চাই স্থল, আকাশ, সাগরপথে সবদিক থেকেই ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রস্তুত ন্যাটো।
ন্যাটোর এমন পরিকল্পনাকে উস্কানিমূলক হিসেবে দেখছে মস্কো। ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ইউক্রেনের সাথে যে সমস্যা ছিল, সুইডেন-ফিনল্যান্ডের সাথে তা ছিল না। তারা ন্যাটো সদস্য হতে চায়, ঠিক আছে। তবে স্পষ্ট বোঝা উচিত, এর আগে কিন্তু আমাদের তরফ থেকে তাদের জন্য কোনো ঝুঁকি ছিল না। এখন যদি ন্যাটো সেখানে ঘাঁটি বানিয়ে মস্কোর জন্য হুমকি তৈরি করে, আমাদেরও একই ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
ন্যাটো বহরে সেনা উপস্থিতি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্যও। এর আগে ন্যাটোর র্যাপিড রিঅ্যাকশন ফোর্সের সেনা সংখ্যা ৪০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ করার ঘোষণা আসে গত সোমবার। ন্যাটোর এমন সম্প্রসারণবাদী পরিকল্পনা বিশ্বকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।
/এমএন
Leave a reply