জলবায়ু পরিবর্তনে ফলে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমের উপকূলীয় অঞ্চলের নারীরা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন। দৈনন্দিন মাত্রাতিরিক্ত লোনাপানি ব্যবহারে জরায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। অপচিকিৎসায় স্থায়ীভাবে জরায়ু হারাচ্ছেন অনেকে। এসব রোগ থেকে বাঁচতে কোনো কোনো কিশোরী জন্মনিরোধ পিল গ্রহণ করছেন।
সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার এক পাশে সুন্দরবন, অন্য পাশে লোকালয়। এখানে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নিচে নেমে গেছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। নদীর পানিও লবণাক্ত। সেই পানি ব্যবহারে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থানে এখানকার নারীস্বাস্থ্য। প্রতিটি গ্রামেই বাড়ছে জরায়ু সংক্রান্ত রোগ ও গর্ভপাতের হার।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ইলিকা ঘোষ জানালেন, নারীস্বাস্থ্য সংক্রান্ত রোগ গত এক দশক আগেও এখানে এত বেশি ছিল না। কয়েক বছর ধরে নারীরা জরায়ু সংক্রান্ত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
নানা শঙ্কা আর জড়তায় এখানে খুব বেশি চর্চা হয় না মাসিককালীন স্বাস্থ্যসুরক্ষার। পানির অপচয় কমাতে ঋতুস্রাবের সময়ে কিশোরী ও নারীরা ব্যবহৃত কাপড় ধুয়ে ফেলেন অস্বাস্থ্যকর পানিতেই। জন্ম নেয় জরায়ুর জটিল সব অসুখ। চিকিৎসাসেবা ও সঠিক পরামর্শ না পেয়ে অনেক নারী কেটে ফেলেন জরায়ু। মাসিক বন্ধ রাখতে কোনো কোনো কিশোরী সেবন করছেন জন্মনিরোধক ওষুধও। এতে আপাতদৃষ্টিতে মাসিককালীন ঝামেলা কিছুটা এড়ানো যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তা যে কতটা ঝুঁকির মুখে ফেলছে শরীরকে সে সম্পর্কে ধারণাও নেই অনেকের।
ডা. ইলিকা ঘোষ বলছেন, সাধারণ ইনফেকশনে জরায়ু কেটে বাদ দেয়া সঠিক চিকিৎসা নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিয়মিত পিল গ্রহণে দুরারোগ্য ব্যাধির ঝুঁকি বাড়ে। নিয়মিত পিল খেলে জরায়ুমুখে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়।
আইসিডিডিআর,বির তথ্যমতে, অতিরিক্ত লবণাক্ত পানি ব্যবহারে নারীদের জরায়ু রোগই শুধু নয়, বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপ, গর্ভকালীন খিঁচুনি ও গর্ভপাতের ঘটনাও, এমনকি বাড়ছে অপরিণত শিশু জন্ম দেয়ার হারও।
/এডব্লিউ
Leave a reply