গিটারের জাদুকর ‘আইয়ুব বাচ্চু’। সঙ্গীত জগতে যিনি একাধারে ছিলেন একজন গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক এবং গায়ক। আশির দশক থেকে গানে, সুরে ও কথায় তিনি মন জয় করেছেন কোটি বাঙালির হৃদয়। শুধু দেশে নয়, দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তিনি ছিলেন অনবদ্য। আজ ‘গিটারের জাদুকর’ আইয়ুব বাচ্চুর ৬০তম জন্মদিন।
আইয়ুব বাচ্চুর গান কথা মনে পড়লে মনের কোণে এখনো উঁকি দেয় সেই ক্যাসেট প্লেয়ার, ফিতার A-পিঠ, B-পিঠ উলটে-পালটে গান শোনার দিনগুলো। আর সেদিনগুলো মনে পড়লে আজও কানের কাছে বেজে উঠে ‘সেই তুমি কেন এত অচেনা হলে’ কিংবা ‘আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি’।
রকধাঁচের কণ্ঠের অধিকারী হলেও আধুনিক, ক্লাসিক্যাল এবং লোকগীতি গেয়েও শ্রোতাদের মুগ্ধতায় ভাসিয়েছেন বাচ্চু। গিটারের ছয় তার যেনো তার জন্যই তৈরি হয়েছিল। তাকে বলা হয় গিটারের জাদুকর। গিটারের ছয় তারে কখনো তুলেছেন আনন্দের সুর, আবার কখনো বেদনা ভরা পঙক্তিমালা।
১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্ম তার। ব্যান্ড মিউজিকে যাত্রা শুরু ফিলিংস নামের একটি ব্যান্ডের মাধ্যমে। ব্যান্ডটি মুলত ইংলিশ গান কভার করতো। এরপর বেশ কিছু দিন সেখানে বাজানোর পর তার ডাক আসে সে সময়ের জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘সোলস’ থেকে।
দশ বছর সোলস ব্যান্ডের সাথে লিড গিটারিস্ট হিসেবে থাকার পর ১৯৯১ সালে বন্ধুরা মিলে গড়ে তুলেন ব্যান্ড ‘এলআরবি’। আর এরপর বাকিটা ইতিহাস। এখন পর্যন্ত এলআরবির ১২টি স্টুডিও অ্যালবাম ছাড়াও তার একক অ্যালবাম বেরিয়েছে ১৬টি। সেই সঙ্গে পিছিয়ে নেই সিনেমার গানও। ‘আমিতো প্রেমে পড়িনি’, ‘আম্মাজান’, ‘অনন্ত প্রেম; তুমি দাও আমাকে’ ইত্যাদি গানগুলো গেয়ে সিনে জগতে তিনি পান দারুণ জনপ্রিয়তা।
২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি জনপ্রিয় এই সঙ্গীতশিল্পী। ‘এই রুপালি গিটার ফেলে একদিন চলে যাবো দূরে বহুদূরে’ গানের কথার মতোই যেনো তিনি চলে গেছেন বহুদূরে, তবে সেই রূপালী গিটারটা ফেলে গেছেন চট্টগ্রামের প্রবর্তক মোড়ে।
তার গান-সুর আর সৃষ্টিতে বাংলার সংগীতপ্রেমীদের মনে তিনি বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল। তাই হয়তো তিনি গেয়েছিলেন-আমি গানে গানে, আসবো ফিরে কানে কানে। দোলাবো হৃদয় তোমার সময় অসময়ে। শুভ জন্মদিন ‘এবি’।
/এসএইচ
Leave a reply