জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার সর্বশেষ ঘটনাটি এখন একটি প্রলম্বিত সংকটে পরিণত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের আর্থিক সহায়তা ও সংকট সমাধানে জোরদার প্রচেষ্টার জন্য আবারও আহ্বান জানাচ্ছে ইউএনএইচসিআর।
এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের এই শরণার্থী সংস্থা জানায়, প্রায় ১০ লাখ রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গা শরণার্থী অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ অবস্থায় বাংলাদেশে রয়েছেন। বেঁচে থাকার জন্য তারা মানবিক সহায়তার ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল। মানবিক কর্মকাণ্ডের তহবিল ক্রমশ হ্রাসমান হওয়ায় তারা তাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। মানবিক সহায়তা বিষয়ক একাধিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি অপূর্ণ চাহিদার মধ্যে রয়েছে সঠিক পুষ্টি, আশ্রয়ের উপকরণ, পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা এবং জীবিকার সুযোগ। ভবিষ্যৎ জীবনের চিন্তায় কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন নৌপথে বিপজ্জনক ভ্রমণের।
এছাড়া নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ সুরক্ষার প্রয়োজন। নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা লোকলজ্জার ভয়ে চাপা পড়ে যায়। তাই ক্ষতিগ্রস্তদের কথা তেমন জানা যায় না। ঠিকঠাক পান না আইনি, চিকিৎসা, মনোসামাজিক ও অন্যান্য সেবা। তাদের শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, ও জীবিকার সুযোগের জন্য সহায়তা জোরদার করতে হবে। এই কার্যক্রমগুলো শরণার্থীদের চূড়ান্ত প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত করবে এবং একই সাথে তাদের বাংলাদেশে অবস্থানকালে নিরাপদ ও কর্মক্ষম থাকতে সাহায্য করবে।
ইউএনএইচসিআর জানায়, বাংলাদেশে প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু এরইমধ্যে মিয়ানমারের পাঠ্যক্রমে শিক্ষাগ্রহণের জন্য নিবন্ধিত হয়েছে, যা মিয়ানমারের ভাষায় পড়ানো হচ্ছে। এছাড়া প্রাপ্তবয়স্ক ও কিশোর রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যাতে কারিগরি শিক্ষা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির মতো বিভিন্ন দক্ষতা উন্নয়নমূলক কার্যক্রম থেকে উপকৃত হতে পারেন সেজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী ইউএনএইচসিআরের কাছে বলেছেন, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের পরিস্থিতি তৈরি হলে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান তারা। তারা তাদের চলাফেরার স্বাধীনতা, নিবন্ধন ও নাগরিকত্বের একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা চান।
জেডআই/
Leave a reply