ইরানে হিজাব বিতর্ক: পুলিশের অত্যাচারে মৃত্যু হয়নি মাহশার, দাবি ফরেনসিক রিপোর্টের

|

ভালোভাবে হিজাব না পরায় ইরানে পুলিশি হেফাজতে ২২ বছরের তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যু নিয়ে ফুঁসে উঠেছে দেশটির জনগণ। হিজাব বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও। বিক্ষোভকারীদের দাবি, হিজাব না পরায় পুলিশের অত্যাচারে মৃত্যু হয়েছে মাহশার। তবে এবার ময়নাতদন্তে বেরিয়ে এসেছে ভিন্ন তথ্য। খবর আল জাজিরার।

মরদেহের ফরেনসিক রিপোর্টে দাবি করা হয়, মাহশার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পুলিশের মারে নয়, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই মৃত্যু হয়েছে মাহশার। এ অসুস্থতা অনেক আগে থেকেই ছিল তরুণীর।

বলা হয়েছে, আট বছর বয়সে মস্তিষ্কে একটি টিউমারের জন্য জটিল অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল মাহশার। সেই অস্ত্রোপচারের ফলে সে সময় সুস্থ হয়ে উঠলেও বড় হওয়ার পর সে সংক্রান্ত অসুস্থতা ধীরে ধীরে ফিরে আসছিল মাহশার। ঘটনাচক্রে যে দিন ইরানের নৈতিক পুলিশ হিজাব দিয়ে চুল পুরোপুরি না ঢাকার অপরাধে মাহশাকে গ্রেফতার করে, সে দিনই তার অসুস্থতা গুরুতর হয়ে পড়ে। এ কারণেই মৃত্যু হয় তরুণীর। অবশ্য এর আগেও তেহরানে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের মহাপরিচালক মেহদি ফারুজেশ বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, মাহশার মাথায় বা মুখে আঘাতের কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে মাহশার পরিবারের দাবি, পুলিশের অত্যাচারেই মৃত্যু হয়েছে মাহশার।

ঘটনার দিনের একটি ভিডিও এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে মাহশার হিজাব নিয়ে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে। এ সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন মাহশা। পুলিশের সামনেই মাহশাকে অচেতন হয়ে পড়ে যেতে দেখা যায়। পুলিশ বলছে, এ সময় হার্ট অ্যাটাক হয় মাহশার। সাথে সাথেই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে কোমায় চলে যান তরুণী। সেই অবস্থায় ফের একবার হার্ট অ্যাটাক হলে মৃত্যু হয় তার।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ সেপ্টেম্বর হিজাব ভালোভাবে না পরার অপরাধে আটক করা হয় মাহশাকে। এর তিনদিন পর মৃত্যু হয় মাহশার। মাহশার পরিবারের দাবি ছিল, তাকে মাথায় ও ঘাড়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। তবে এ দাবি নাকচ করে দেয় প্রশাসন।

এ ঘটনায় ফুঁসে ওঠে দেশটির নারীরা। হিজাব পুড়িয়ে ও চুল কেটে এর প্রতিবাদ করছেন তারা। এর সাথে যুক্ত হয়েছে পশ্চিমারাও। তবে কঠোর হাতে আন্দোলন দমন করতে সচেষ্ট ইরানের সরকার।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply