শনিবার থেকে সুন্দরবনে শুটকি আহরণ মৌসুম শুরু; দুবলার চরে যাচ্ছেন জেলেরা

|

বাগেরহাট প্রতিনিধি:

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার (৩০ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে সুন্দরবনের শুটকি আহরণ মৌসুম। বঙ্গোপসাগর উপকূলের দুবলা, আলোরকোল, নারিকেল বাড়িয়া, শেলা ও মেহের আলীর চর অঞ্চলে ৫ মাসের জন্য শুরু হচ্ছে এই মৌসুম।

শুক্রবার মধ্যরাতে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে শনিবার সকাল থেকে যাত্রা শুরু হবে শুটকি পল্লীতে। চলতি বছর গতবারের চেয়ে বেশি মাছ আহরণের আশা জেলে মহাজন ও বনবিভাগের। ফলে এ মৌসুমে শুটকি থেকে অন্তত ৫ কোটি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বন বিভাগের।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শুটকি আহরণে যেতে সুন্দরবনের প্রবেশপথ চিলাখাল, পশুর নদী ও জয়মনি এলাকায় শত শত জেলে নৌকা ও ট্রলারে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেখানে টানা ৫ মাস অবস্থান করে সামুদ্রিক মাছ, চিংড়ি, কাকড়া ধরে শুটকি প্রক্রিয়াকরণ করবেন তারা।

এদিকে সুন্দরবনের ক্ষতি না করে জেলেদের দুবলায় অবস্থান করার কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে বন বিভাগ। এক্ষেত্রে ডিপো ও ঘর তৈরির বাঁশ, খুঁটি, চাচ, চাটাই ও জ্বালানিসহ প্রয়োজনীয় রসদ বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

জেলেরা জানান, এই পাঁচ মাসের আয় দিয়েই সারা বছর চলতে হয় তাদের। অনেকে লোন করে শুটকি আহরণে যান। সেখানে ওষুধ, মোবাইল নেটওয়ার্ক, বিশুদ্ধ পানিসহ নানান সংকট রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে সেখানে টিকে থাকতে হয়। ফলে এসব সমস্যা নিরসনে সরকারি সহযোগিতা কামনা করেছেন।

জেলেদের পরিবারের নারী ও শিশুরা জানায়, মৌসুমের পাঁচ মাস বাসায় পুরুষ সদস্য থাকে না। ফোনে নেটওয়ার্ক না থাকায় যোগাযোগ করতে পারে না। সার্বক্ষণিক দুশ্চিন্তায় থাকতে হয় তাদের।

মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের লে. কমান্ডার এস আশিক আহমেদ সিদ্দিক বলেন, দুবলা আলোরকোল শুটকির জন্য বিখ্যাত। শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে মৌসুম। ফলে এই জায়গায় আমাদের জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। স্টেশন আউটপোস্টগুলোকে একটিভেট করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক আমাদের জাহাজ পেট্রোলিংয়ে নিয়োজিত আছে। বিশেষ করে দুবলার চর ও আলোরকোল অঞ্চলে প্রতিনিয়ত টহল চলমান রয়েছে। আমরা এটুকু আশ্বাস দিতে পারি আমাদের যে মৎস্যজীবী ভাইয়েরা আছেন; তারা অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যে এবং নিরাপত্তার সাথে এই মৌসুমে শুটকি আহরণ করতে পারবেন।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, দুবলার চরে ৪টি পল্লীতে ১ হাজার ৩০ জন জেলেকে শুটকি আহরণের অনুমতি দিয়েছি। সেখানে ৬৩টি ডিপো ঘর এবং ৯৬টি দোকান সেখানে থাকবে। ২৯ অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলেরা সেখানে অবস্থান করবে। মাছ আহরণ করে রোদে শুকিয়ে দেশে বিদেশে রফতানি জন্য প্রস্তুত করবে। চলতি মৌসুমে এখান থেকে পাঁচ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের আশা আমাদের।

এএআর/ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply