বরগুনায় ডাকাতির অভিযোগে ‘রুটি পড়া’ খাইয়ে বৃদ্ধকে নির্যাতন

|

আমতলী থানা। ছবি : সংগৃহীত

বরগুনা প্রতিনিধি:

বরগুনার আমতলীতে তিন মাস পূর্বের ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে এলাকার কিছু মানুষকে ‘রুটি পড়া’ খাওয়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই রুটি খেয়ে খবির হাওলাদার (৫৫) নামে এক বৃদ্ধ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ডেকে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয় বলে দাবি করেছে পরিবারের সদস্যরা। একইসাথে ‘রুটি পড়া’ খাওয়ানোর বিষয়টি সাজানো নাটক বলে দাবি ভুক্তভোগীর পরিবারের।

তাদের অভিযোগ, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে বিষ মাখানো আলাদা রুটি খাওয়ানো হয়। পরে নাটকীয়ভাবে তাকে অপরাধী সাব্যস্ত করে বাসায় নিয়ে পুনরায় নির্যাতন করা হয়। পরে খবিরের ছেলে ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সাহায্যে তার বাবাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা করায়। এ ঘটনায় থানায় মামলা না নেয়ায় আদালতে মামলা করেন তারা; এজাহারের নির্দেশ দিলেও সেটি অন্তর্ভুক্ত করতে ঘুষ দাবি করেন আমতলী থানার এক এসআই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিন মাস আগে আমতলীর পশ্চিম চিলা গ্রামের ইব্রাহিম ও হেলাল খানের বাড়িতে ডাকাতি হয়। ওই ঘটনায় ডাকাত চিহ্নিত করতে ফকিরের থেকে ‘রুটি পড়া’ এনে খাওয়ানো হয় একই গ্রামের খবির হাওলাদারসহ আরও ১০ জনকে। এতে অন্যদের কোনো সমস্যা না হলেও বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন খবির। পরে চৌকিদার দিয়ে খবিরকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ তার পরিবারের।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, খবির ভালো মানুষ। তার সাথে ইব্রাহিমের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যেই তাকে আলাদা রুটি খাওয়ানো হয়েছে।

ভুক্তভোগীর ছেলে মিজান বলেন, ইব্রাহিমের বাড়িতে নির্যাতনের সময় বাবার মাথায় ৩০ কলসি পানি ঢালা হয় এবং তার পায়ের নখ তুলা ফেলা হয়। বাবার পা থেকে রক্ত ঝরছিলো। বাবাকে এমন নির্যাতন করতে দেখে আমি একাধিকবার ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশের সহায়তা চাইলে পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে জানতে ইব্রাহিম ও হেলালের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের কাউকেই ফোনে পাওয়া যায়নি।

জানতে চাওয়া হলে হেলালের স্ত্রী বলেন, ওই দিন সকাল ১০টার দিকে রুটি খাওয়ানো হয়েছে। খবিরকে নির্যাতন করা হয়নি, জামাই আদর করা হইছে।

ভুক্তভোগীর আরেক ছেলে মিরাজ বলেন, এ ঘটনায় আমরা থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে আদালতে মামলা করি। আদালত এজাহারের নির্দেশ দিলেও এজাহার নিতে ১১ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন এসআই মো. শহিদুল ইসলাম।

এ বিষয়ে আমতলী থানার এসআই শহিদুল ইসলাম বলেন, ওরা আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদের সাথে পার্সোনালি কথা বলেছি।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি আমতলী থানার ওসি এ কে এম মিজানুর রহমান।

এএআর/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply