যে ৩ কারণে চীনের দিকে ঝুঁকছে সৌদি আরব

|

সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং সৌদি আরব সফর করেছেন। রিয়াদ ও তার মিত্র দেশগুলোর সাথে ওয়াশিংটনের টানাপোড়নের মধ্যেই এশিয়ার অন্যতম এই শক্তিধর দেশ মধ্যপ্রাচ্যে প্রবেশের পথ খুঁজছে। এদিকে এরইমধ্যে রিয়াদের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমাদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে নতুন সমালোচনা।

সৌদি আরব কেনো চীনের দিকে ঝুঁকছে তার একটি বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে রুশ বার্তাসংস্থা আরটিতে।

চীনের নাক না গলানো নীতি: ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী অন্য কোনো দেশের বিষয়ে নাক না গলানোর নীতিতে চলে বেইজিং। ওয়াশিংটন উপসাগরীয় দেশ ও ইরানে সহিংসতা জিইয়ে রাখতে শিয়া ও সুন্নিগোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধে উসকানি দিলেও বেইজিং দুপক্ষের সাথেই সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। চীন এ বছরের শুরুতে ইরানের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তি করেছে। এই চুক্তির আওতায় রয়েছে বাণিজ্য, অর্থনীতি, পরিবহনসহ নানা বিষয়।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা আনতে এ বছর চীন ৫ দফা নিরাপত্তা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে। চীনের এই পাঁচ দফা কর্মসূচিকে এই অঞ্চলের বেশীরভাগ দেশগুলোই সমর্থন করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইরাকে হামলা না করে ইরানেরে সাথে সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা করার এই কর্মসূচিকে একটি উদাহরণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে গুরুত্ব দেয়া: কূটনৈতিক নানা বিশ্লেষণ থাকার পরও চীনের প্রেসিডেন্ট তার সৌদি সফরে অর্থনৈতিক সহযোগিতাকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। সম্প্রতি রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে তেলের দাম বৃদ্ধি পেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে আহ্বান জানান। কিন্তু ওপেকের বৈঠকে সৌদি আরব তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির বিপক্ষে ভোট দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয় ওয়াশিংটন। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী শি জিনপিংয়ের সফরকালে চীন ও সৌদি আরবের মধ্যে ২ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের চুক্তি হবে।

চীনের রাজনৈতিক চাপ না দেয়া: ওয়াশিংটনের মতো চীন অন্য দেশের ওপর রাজনৈতিক চাপ দেয় না। তারা শুধু অর্থনৈতিক দিকগুলোকেই বিবেচনা করে। যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপের ফলে সৌদিআরব তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের নানা দেশে সহিংসতা উসকে দিয়েছে। সেখানে চীন এ ধরনের কোনো ঝামেলায় না গিয়ে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক স্বার্থকেই গুরুত্ব দিচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের চেয়ে অনেক বেশি সফল চীন। পশ্চিমারা বিরোধ জিইয়ে রেখে নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বেইজিং, সৌদি আরব ও ইরানের মতো দেশগুলোর সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব বজায় রেখে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা আনতে ভূমিকা রাখতে পেরেছে।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply