কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের টেকনাফ বাহারছড়ার জাহাজপুরা পাহাড়ে অপহরণ হওয়া ৮ জন ৩ দিন পর আহত অবস্থায় বাড়ি ফিরেছেন। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার জানালেন অপহরণকারীরা রোহিঙ্গা নয়।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে তাদের বাড়ি ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম। এর আগে বুধবার রাত আড়াইটার দিকে তারা বাড়ি ফেরেন বলে স্বজনরা নিশ্চিত করেন। সকালে তাদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
গেল রোববার বিকেলে বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা পাহাড়ি ঝিরি খালে মাছ শিকার করতে গেলে সেখান থেকে অপহরণকারীরা ৮ জন ব্যক্তিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তাদের প্রত্যেকের মুক্তিপণের জন্য তিন লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা।
তারা হলেন, বাহারছড়া ইউনিয়নের রশিদ আহমদের ছেলে মোহাম্মদ উল্লাহ, ছৈয়দ আমিরের ছেলে মোস্তফা কামাল, তার ভাই করিম উল্লাহ, মমতাজ মিয়ার ছেলে মো. রিদুয়ান, রুস্তম আলীর ছেলে সলিম উল্লাহ, কাদের হোসেনের ছেলে নুরুল হক, রশিদ আহমদের ছেলে নুরুল আবছার ও নুরুল হকের ছেলে নুর মোহাম্মদ।
৩ দিন ধরে প্রশাসনের লোকজন ও স্থানীয়সহ ৪ শতাধিক মানুষ পাহাড়ি অঞ্চলে অপহৃত উদ্ধার অভিযানে নেমেছিল। একই সাথে পুলিশ গত তিন দিন ধরে অভিযান চালিয়েছে। ড্রোনের সাহায্যে পুলিশ সন্ত্রাসীদের আস্তানা চিহ্নিত করার চেষ্টা চালিয়েছে।
অপহৃত পরিবারের সদস্য মোহাম্মদ হাবিব বলেন, অপহৃত ৮ জনকেই মুক্তিপণের টাকার জন্য নানানভাবে শারীরিক নির্যাতন করেছে অপহরণকারীরা। তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতনের ক্ষত রয়েছে। তারপর অপহরণকারীরা তাদের ছেড়ে দিয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, পাহাড়ি এলাকায় আস্তানা করে বসবাসরত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা স্থানীয় একটি ডাকাত দলের সহযোগিতায় তাদের অপহরণ করেছিল।
এদিকে এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় কক্সবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং করেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম। এ সময় অপহৃত ৮ জনকে সেখানে আনা হয়।
ব্রিফিং এ পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, তিনদিন পর অপহরণকারী চক্রের কাছ থেকে ফেরা ৮ ব্যক্তির সাথে আলাপ করে পুলিশ তথ্য সংগ্রহ করেছে। অপহরণের পর এদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। তাদের পরিবারের সাথে কথা বলে পুলিশ পাহাড়ে অভিযান শুরু করে। অভিযানে পুলিশ স্থানীয়দের সাথে নিয়ে পাহাড় ঘিরে রাখে। ফলে ভয়ে এদের ছেড়ে দেয়া হয়। তাদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার জানান, মুক্তিপণ দাবি করলেও অপহৃতরা কোনো মুক্তিপণ দেননি। এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য মতে, অপহরণকারীরা রোহিঙ্গা নয়। ওই চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশি নাগরিক। এ ব্যাপারে মামলার ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এটিএম/
Leave a reply