করোনার তথ্য সরবরাহ ইস্যুতে চীনের বিরুদ্ধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অভিযোগ

|

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মহাসচিব তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়াসুস।

চলমান করোনা পরিস্থিতির তথ্য সরবরাহ নিয়ে এবার চীনের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা বলছে, সংক্রমণ ও মৃত্যুর প্রকৃত চিত্র তুলে ধরছে না শি জিনপিং সরকার। মহামারির নতুন ঢেউ মোকাবেলায় চীন প্রশাসনকে সহযোগিতামূলক আচরণের আহ্বান জানায় ডব্লিউএইচও। এদিকে, বিভিন্ন দেশে কার্যকর হচ্ছে চীনের ওপর আরোপ করা ভ্রমণ বিধিনিষেধ। খবর দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের।

করোনা রোগী সামাল দিতে চিকিৎসকদের হিমশিম খাওয়ার চিত্র এখন চীনের বেশিরভাগ হাসপাতালেই। প্রথমত, রোগীর উপচে পড়া ভিড়, সাথে চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব- সব মিলিয়ে এখন বেশ বিপর্যস্ত দেশটির চিকিৎসা সেবা খাত।

বেইজিংয়ের একটি হাসপাতালে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মী লি উই বলেন, আমরা দিনরাত পরিশ্রম করছি। গুরুতর অসুস্থ রোগী আসা মাত্রই তাদেরকে জরুরি বিভাগে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। বিশেষভাবে তাদের দেখাশোনা করছি আমরা। যাতে সবাই আশ্বস্ত হন যে, সবাইকে সমান গুরুত্বের সাথে সেবা দেয়া হচ্ছে।

তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের বিরুদ্ধে এনেছে গুরুতর অভিযোগ। সংস্থাটির দাবি, চলমান করোনা সংক্রমণ নিয়ে সঠিক তথ্য সরবরাহ করছে না বেইজিং। দেশটির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিশ্বব্যাপী মহামারির নতুন ঢেউ মোকাবেলায় যথাযথ তথ্য জানানোর আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মহাসচিব তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়াসুস বলেন, চীনের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে দেশটির বহু সাধারণ মানুষ। তাই সংক্রমণ ও মৃতের প্রকৃত তথ্য জানাতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এ ডাটা অন্য দেশের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণেও সাহায্য করবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারলেই কেবলমাত্র ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব বলেও জানান তিনি।

এদিকে, মহামারির বিস্তার রোধে বিভিন্ন দেশে কার্যকর হতে শুরু করেছে চীনের বিরুদ্ধে আরোপ করা ভ্রমণ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ। বিমানবন্দরে গণহারে নমুনা পরীক্ষা, ফ্লাইটে ওঠার ৪৮ ঘণ্টার মাঝে করা করোনা পরীক্ষার সনদ জমা দেয়াসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপরও জোর দিচ্ছে বিভিন্ন দেশের প্রশাসন।

এ প্রসঙ্গে ইইউ কমিশনের মুখপাত্র টিম ম্যাকফি বলেন, করোনা ইস্যুতে যেসব বিধিমালা প্রকাশ করা হবে তা ইইউ এর সব সদস্য রাষ্ট্রে কার্যকর হবে। চীন থেকে আসা ভ্রমণকারীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে। এছাড়া, বিমানবন্দরে নমুনা পরীক্ষা, টিকাগ্রহণের সনদের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। চীন যেহেতু প্রকৃত কোনো তথ্যই প্রকাশ করছে না, তাই নিজস্ব প্রতিরোধ ব্যবস্থার ওপর জোর দিচ্ছি আমরা।

সম্প্রতি, জিরো কোভিড নীতি শিথিলের পর থেকেই গোটা চীনে আশঙ্কাজনকভাবে বিস্তার লাভ করেছে করোনা। দেশটির সরকারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দিনে গড় সংক্রমণ সাড়ে তিন হাজার হলেও পশ্চিমা গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী তা কয়েক লাখ।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply