ইনস্টাগ্রামে যুদ্ধবিরোধী পোস্ট, ১০ বছর গৃহবন্দি থাকতে হবে রুশ শিক্ষার্থীকে

|

রাশিয়ান শিক্ষার্থী ওলেসিয়া ক্রিভতসোভা। ছবি : সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে যুদ্ধবিরোধী পোস্ট শেয়ার করার জেরে এক রাশিয়ান শিক্ষার্থীকে ১০ বছরের জন্য গৃহবন্দি থাকার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির আদালত। এছাড়া বাড়িতে থাকাকালীন তার পায়ে একটি ইলেকট্রনিক ট্যাগ লাগানো থাকবে যেন পুলিশ তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে পারে। খবর বিবিসির।

২০ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থীর নাম ওলেসিয়া ক্রিভতসোভা। তিনি রাশিয়ার আরখানগেলস্কের নর্দান ফেডারেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে অধ্যয়নরত। শুধুমাত্র আদালতে হাজিরা দেয়া ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ক্লাস মিস করেছেন বলে তিনি জানান।

জানা গেছে, ইনস্টাগ্রামে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধবিরোধী একটি পোস্ট দেন ওলেসিয়া। এছাড়া একটি চ্যাটিং গ্রুপে যুক্ত থেকে সহপাঠীরা যুদ্ধবিরোধী আলাপ করেন। সেখানে তাদের মধ্যে একজন গত অক্টোবরে রাশিয়াকে সংযুক্ত করা ক্রিমিয়ার সাথে যুক্ত সেতুতে বিস্ফোরণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

ওলেসিয়া বলেন, আমি সেতুটি সম্পর্কে একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট করেছিলাম। সেখানে যা ঘটেছে তাতে ইউক্রেনীয়রা কীভাবে খুশি ছিল তার চিত্র হিসেবে। আর যুদ্ধ সম্পর্কে এক বন্ধুর পোস্ট শেয়ার করেছিলাম। এরপর শুরু হয় নাটকীয়তা।

তিনি বলেন, আমি আমার মায়ের সাথে ফোনে কথা বলছিলাম। এমন সময় সদর দরজা খোলার শব্দ শুনেতে পেলাম। বেরিয়ে দেখি প্রচুর পুলিশ। তারা আমার ফোন কেড়ে নিয়েছিল।

ওলেসিয়া বলেন, ইন্টারনেটে কিছু পোস্ট করার জন্য কেউ এত দীর্ঘ কারাদণ্ড পেতে পারে আমি কল্পনাও করিনি। আমি পাগলাটে রায়ের রিপোর্ট দেখেছি। কিন্তু খুব বেশি মনোযোগ দেইনি। আমি কথা চালিয়ে যাচ্ছি।

এ ছাত্রীর নাম এখন রাশিয়ার সরকারি সন্ত্রাসী ও চরমপন্থীদের তালিকায় যুক্ত করেছে সরকার। আর এ সিদ্ধান্তকেও পাগলাটে বলছেন তিনি।

গৃহবন্দির নিয়ম অনুসারে ওলেসিয়াকে ফোনে কথা বলা এবং অনলাইন দুনিয়ায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তার ডান পায়ে একটি আকর্ষণীয় ট্যাটু রয়েছে- যেখানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে একটি মাকড়সা হিসেবে আঁকা হয়েছে। তাতে একটি অরওয়েলিয়ান শিলালিপিতে লেখা ‘বড় ভাই আপনাকে দেখছেন’।

এছাড়া, ওলেসিয়ার টি-শার্টে একটি পুলিশ ভ্যানের ছবি রয়েছে। যাতে লেখা ‘স্কুল বাস’। কর্তৃপক্ষের সমালোচনার জন্য তরুণ রাশিয়ানরা কীভাবে শাস্তি পাচ্ছেন তার প্রকাশ এটি। ওলেসিয়া বলেন, বিতর্ক, গণতন্ত্র বা স্বাধীনতা চর্চার সাহস নেই রাষ্ট্রের। তবে তারা সবাইকে কারাগারে রাখতে পারবে না। এক পর্যায়ে তাদের সেল ফুরিয়ে যাবে।

/এএআর/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply