২৪তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে প্রথমবারের মতো পদক পেলেন বাংলাদেশ দলের প্রত্যেকেই

|

২৪তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ দলের প্রত্যেকেই পদক পেয়েছেন প্রথমবারের মতো। স্বর্ণ আর রৌপ্যের সাথে টেকনিক্যাল ক্যাটাগরিতে মিলেছে এ অর্জন। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে অভিজ্ঞতা অর্জন ও বাংলাদেশকে রোবটিকসে এগিয়ে নিতে চায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে প্রান্তিক পর্যায়েও রোবটিকসে আগ্রহীদের নিয়ে কাজ করা সম্ভব।

দুর্যোগ-সংকটকালীন অবস্থা পেরিয়ে মুনা সামিয়া আর পৃথিবী’র বানানো রোবট যে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে সক্ষম বস্তু বা পণ্য ডেলিভারি দিতে। তাদের তৈরি ছয়টি মডেলের রোবট এবার আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে রোবট ইন মুভি ক্যাটাগরিতে স্বর্ণ জিতেছে।

আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে স্বর্ণ বিজয়ী সামিয়া মেহনাজ বলেন, যখন কোথাও ভূমিকম্প হবে তখন এই রোবটগুলো উদ্ধারকাজে ইন্সট্রাকশনস দিবে এবং যখন সবগুলো রোবট একসাথে কাজ করবে তখন আমরা খুব কম সময়ের মধ্যে আমরা যেকোনো বাধা অতিক্রম করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ডেলিভারি করতে পারবো।

২৪তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ এবার ১টি স্বর্ণ, ২টি রৌপ্য, ২টি ব্রোঞ্জ ও ৮টি টেকনিক্যাল পদক অর্জন করেছে। এর মধ্যে রোবট ইন মুভির জুনিয়র গ্রুপে রৌপ্য পেয়েছে মাহরুজ মোহাম্মদ আয়মান, শবনম খান ও জাইমা যাহিন ওয়ারা।

আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে সিলভার জয়ী জাইমা যাহিন ওয়ারা বললেন, আমাদের রোবট ‘টোকাই’ অর্ডার রিসিভ করে। তারপর সেটা বুঝিয়ে দেয় হেক্সাকে। হেক্সা অর্ডার প্রিপেয়ার করে ডেলিভারি করতে যায়। এবং যাওয়ার পথে যদি সে কোনো বাধার সম্মুখীন হলে সে নিজেই তার বাধা সরাতে বা অতিক্রম করতে পারে।

তাজওয়ারের বানানো রোবট ব্যস্ত নাগরিক জীবনে প্রশান্তি এনে দেবে শহরের বাসিন্দাদের। দুর্যোগের সময়ও কাজ করতে সক্ষম মাহারুজের রোবট।

আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে টেকনিক্যাল পদক জয়ী মাহির তাজওয়ার চৌধুরী জানান, বেসিক্যালি আমার রোবটটি একটি চাইল্ড কেয়ার রোবট। স্মার্ট শহরে বাবা-মায়েরা যখন কাজে ব্যস্ত থাকেন তখন এই রোবটটি বাচ্চাদের খেয়া;ল রাখতে পারে।

মেধা, মনোবল আর হার না মানা প্রত্যয়ে বিশ্বমঞ্চে বাংলাকে তুলে ধরছে এই ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। তবে এই কার্যক্রমের পথটা এত সহজও ছিলো না। পৃষ্ঠপোষকতা ও সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া প্রান্তিক পর্যায়ে রোবটিকসে আগ্রহীদের কাছে পৌছানো দুস্কর বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াডের প্রধান সমন্বয়ক ও মেন্টর মিশাল ইসলাম জানালেন, রোবোটিকসে কাজ করতে হলে আর্থিক ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ। রোবট বানাতে যে হার্ডওয়্যারগুলো প্রয়োজন হয় সেগুলো অনেক সময়ই বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। আর যেগুলো বাংলাদেশে পাওয়া যায় সেগুলো বেশ দামী, ফলে অনেকেই কিনতে পারেন না।

ঢাবি’র রোবটিক্স এন্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. সেঁজুতি রহমান জানান, আমাদের দেশে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় বলেন বা জাতীয় কোনো জায়গা বলেন কোথাওই কিন্তু রোবোটিকস সংক্রান্ত কোনো ল্যাব নেই। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকোনো শিক্ষার্থী এসে সেই ল্যাব ব্যবহার করতে পারবে এমন কোনো সুবিধাই দেশে নেই।

এতো বাধা ও সমস্যার পরও এমন অর্জনগুলোই একদিন আন্তর্জাতিক রোবটিকসে বাংলাদেশের নাম আরও উজ্জ্বল করবে, বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply