নির্বাচন কমিশন সংস্কারে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

|

ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনের সংস্কারে সর্বোচ্চ আদালতের ঐতিহাসিক রায় নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ভারতে। বিশ্লেষকরা বলছেন, কমিশনার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুধু সরকারের হাতে থাকায় ক্ষমতাসীনদের আজ্ঞাবহ হয়ে উঠেছিল ভারতের নির্বাচন কমিশন। প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি এবং বিরোধী দলীয় প্রধানের সমন্বয়ে এখন সত্যিকারের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। যদিও, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ নিয়ে চলছে সমালোচনা। টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবর।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছিল নির্বাচন কমিশনের সংস্কার এবং পুনর্গঠন নিয়ে। বর্তমান ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনার নিযুক্ত করেন রাষ্ট্রপতি। ফলে সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে উঠেছিল নির্বাচন কমিশন, এমন অভিযোগ ওঠে। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এ ব্যবস্থায় পরিবর্তনের নির্দেশ দেয়া হয়। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এতে সত্যিকারের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে ভারতে।

ভারতের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কোরাইশি বলেছেন, মানবাধিকার সংস্থা, সিবিসি, সিআইসি এমনকি কৃষি বিভাগের পরিচালক নিয়োগ দেয়ার জন্য আলাদা আলাদা স্বাধীন কমিশন রয়েছে। অথচ নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ এবং নিযুক্তির দায়িত্ব শুধুমাত্র ক্ষমতাসীনদের। আদালত তাই বিরোধী দলীয় প্রধানকে এই প্রক্রিয়ার সাথে সংযুক্ত করে একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা ভারতের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও মজবুত করবে।

রায়ে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি এবং বিরোধী দলীয় প্রধানের নেতৃত্বে গঠিত হবে কমিটি। তারাই নিযুক্ত করবেন নির্বাচন কমিশনারদের। বিরোধী দলগুলো একে স্বাগত জানালেও বিজেপিসহ ক্ষমতাসীন জোট বলছে, নির্বাচন কমিশন গঠনে হস্তক্ষেপ আদালতের কাজ নয়। এটি নির্বাহী বিভাগেরই দায়িত্ব।

বিজেপির মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা বলেন, আমরা প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা এবং স্বচ্ছতা চাই। কিন্তু প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই নিজস্বতা থাকা উচিত যেখানে আদালতের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। তবুও আমরা সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই; অথচ এ ইস্যু নিয়েও নোংরা রাজনীতি করতে চাইছে কংগ্রেস, যা দু:খজনক।

অন্যদিকে, কংগ্রেস মুখপাত্র সঞ্জয় ঝা বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ভারতীয় গণতন্ত্র রক্ষা পেলো। কারণ, বর্তমান সরকার হলো কর্তৃত্বপরায়ণ এবং স্বেচ্ছাচারি। রাষ্ট্রের প্রতিটি পর্যায়ে দুর্নীতি এবং দলীয়করণের নজির স্থাপন করে রেখেছে বিজেপি। তারা প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ক্ষমতায় টিকে থাকার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

ভারতে ৬ বছর মেয়াদি নির্বাচন কমিশন গঠনে মূলত বেছে নেয়া হয় সাবেক আমলা এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের। ধারণা করা হচ্ছে, আদালতের রায়ের পর পরিবর্তন আসবে এই ধারাতেও।

আরও পড়ুন: কম্বোডিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা কেম সোখার ২৭ বছরের কারাদণ্ড

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply