সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক দেউলিয়ায় প্রশ্নের মুখে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ ব্যবস্থাপনা নীতি

|

সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের বিপর্যয়ে প্রশ্নের মুখে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ ব্যবস্থাপনা নীতি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় দেশটির ব্যর্থতা ফুটে উঠেছে। এদিকে, সিলিকন ভ্যালি দেউলিয়া হওয়ায় চরম বিপাকে প্রযুক্তি খাত। মূলত এই ব্যাংকের বেশিরভাগ গ্রাহকই টেক কোম্পানি। ফলে অর্থ আটকে পড়ায় বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় পড়েছে ছোট কোম্পানিগুলো। খবর এপির।

মাত্র দু’দিনের ব্যবধান দেউলিয়া গোটা একটি ব্যাংক। শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দেয়ার পরই আতঙ্কে হাজার হাজার আমানতকারী অর্থ তুলে নিলে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকে ধস নামে। বর্তমানে দেশটির ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মত, ৪০ বছরের পুরনো প্রতিষ্ঠানটির পতনের মাধ্যমে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়েছে। বলছেন, ফেডারেল রিজার্ভের ধারাবাহিক নীতি সুদহার বৃদ্ধির বলি হয়েছে সিলিকন ভ্যালি। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবীদ অ্যান্হনি চান বলেন, যখন একটি ব্যাংক তাদের আমানত নির্দিষ্ট কোনো একটি খাতে কেন্দ্রীভূত করে তখন তারা দুর্বল হয়ে পড়ে। অর্থ আয়ের জন্য সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক মার্কিন ট্রেজারি সিকিউরিটিজ কিনেছিলো। ফেডারেল রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করায়, ট্রেজারি কিনে স্বল্পমেয়াদি লাভ হলেও বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়ে তারা। পরে শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়, যা তাদের এই বিপদে ফেলেছে।

পশ্চিমা ব্যাংকের এই বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত প্রযুক্তিখাত। মূলত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বেশকয়েকটি দেশের ছোট-বড় বিভিন্ন টেক কোম্পানিই ব্যাংকটির গ্রাহক। যদিও ব্যাংকে যাদের আড়াই লাখ ডলার পর্যন্ত আমানত রয়েছে তাদের অর্থ তোলার সুযোগ দেয়া হয়েছে; তবে প্রতিষ্ঠানটির বেশিরভাগ গ্রাহকেরই এরচেয়ে বেশি অর্থ গচ্ছিত রয়েছে। ফলে বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় বহু প্রতিষ্ঠান।

যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বলেন, সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের পতন আমাদের প্রযুক্তি খাতকে চরম ঝুঁকিতে ফেলেছে। ব্যাংকটিতে যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতিশীল ও সম্ভাবনাময় অনেক প্রতিষ্ঠানের অর্থ গচ্ছিত আছে। সংকট মোকাবেলায় সীমিত সময়ের জন্য অর্থ ছাড়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নরের সাথে আমি আলোচনা করেছি। তবে অবশ্যই আমাদের এ সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান খুঁজতে হবে।

২০০৮ সালে ওয়াশিংটন মিউচুয়ালের পর এটিই আর্থিক খাতে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্দিনের কেবল শুরু সামনে আরও কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply