আরব বিশ্বজুড়ে পবিত্র রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জন্য থাকে ফ্রি ইফতারের ব্যবস্থা। এসব আয়োজন বৈষ্যমকে দূরে ঠেলে এক কাতারে দাঁড় করায় ধনী-গরিব সবাইকে। প্রতি বছরই বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার উদ্যোগে বিত্তশালীদের সহায়তায় বিশাল সমারোহে আয়োজন করা হয় এসব আয়োজনের। মুসলিম ছাড়াও নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষ একসাথে বসে একই খাবার খেয়ে ইফতার করেন।
নানা সঙ্কটে জর্জরিত লেবানন, সিরিয়া, ইরাক, আলজেরিয়া, ফিলিস্তিনে দু’বেলা খেতে পারাই অনেকের কাছে বিলাসিতা। লাগামহীন মূল্যস্ফীতির কারণে জনজীবনে নাভিশ্বাস অব্স্থা। রমজান মাসে একটু শান্তি এনে দিতে দেশগুলোতে বিভিন্ন শহরে থাকে ফ্রি ইফতারের আয়োজন। আর তাতে অংশ নেন অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
স্বেচ্ছাসেবী হানানি নাসের এ প্রসঙ্গে বলেন, বিশ্বজুড়ে এখন অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। মানুষের অবস্থা খুবই শোচনীয়। খাবারের জন্য প্রচুর মানুষ আমাদের কাছে আসছে। আল্লাহকে ধন্যবাদ, এ পরিস্থিতিতেও ভাল মানুষেরা এগিয়ে এসেছে। তাই, সবাইকে আমরা খাবার দিতে পারছি।
ইফতার সামনে নিয়ে সারিবদ্ধ শত শত মানুষের অপেক্ষার দৃশ্য রমজানজুড়ে গোটা আরব বিশ্বেই দেখা যায়। নিম্ন আয়ের মানুষের কথা ভেবে আয়োজন করা হলেও এতে অংশ নেয় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ।
বিলাসী জীবন যাপনের জন্য বিখ্যাত সংযুক্ত আরব আমিরাতের চোখ ধাঁধানো চাকচিক্যের পেছনে অবদান হাজারো অভিবাসী শ্রমিকের। অথচ তাদের নিজেদের জীবন কাটে দারিদ্রতায়। প্রতিবারের মতো এবারও বিপুল অভিবাসী শ্রমিকের জন্য দুবাইসহ বেশ কয়েকটি শহরে বিশাল সমারোহে করা হয়েছে ফ্রি ইফতারের আয়োজন।
আরব আমিরাতের স্বেচ্ছাসেবী ফাইয়াজ আহমেদ বলেন, দুবাইয়ে এমন অনেক লোক রয়েছে যাদের ইফতারে খাবারের সাহায্য প্রয়োজন। তাদের জন্যই আমাদের এ উদ্যোগ। আমরা শুধু খাবার সরবরাহই করি না, তাদের সাথে বসে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসাথে খাবার খাই। গত ১৮ বছর ধরে আমরা রমজানে ইফতার সরবরাহ করছি। রমজানজুড়েই আমাদের এ আয়োজন থাকে।
প্রসঙ্গত, রমজানজুড়েই সৌদি আরব, বাহরাইন, কাতার মিশরের বিভিন্ন শহরেও হাজার হাজার মানুষের একসাথে ইফতার করার দৃশ্য দেখা যায়। এটি যেন আরব বিশ্বের রমজানের ঐতিহ্যেই পরিণত হয়েছে।
/এসএইচ
Leave a reply