পুঁজিবাজারে অস্থিরতা: ফ্লোর প্রাইসকে দায়ী করছেন বিনিয়োগকারীরা

|

আলমগীর হোসেন:

কিছুতেই অস্থিরতা কাটছে না পুঁজিবাজারের। সবকিছুর জন্য ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন মূল্যস্তরকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। এটিই এখন পুঁজিবাজারের গলার কাটা। বেশিরভাগ কোম্পানি ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকায় ক্ষতির মুখে সবপক্ষই। সুদ পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত মার্জিন ঋণের গ্রাহকরা।

মূলত, পতন ঠেকাতে ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন মূল্যস্তর নির্ধারণ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এরপরই লেনদেন বন্ধ হয়ে যায় বেশিরভাগ কোম্পানির। মাসের পর মাস ক্রেতাশূন্য নামি-দামি অনেক কোম্পানি। লেনদেন হচ্ছে হাতে গোনা কয়েকটি কোম্পানির। শেয়ার বিক্রি করতে না পারায় ভারি হচ্ছে মার্জিন ঋণের সুদের পাল্লা। যা নিয়ে চিন্তিত বিনিয়োগকারীরা।

পুঁজিবাজারে কয়েকজন বিনিয়োগকারী বললেন, ফ্লোর প্রাইস এখন আমাদের গলার কাটা। শেয়ার বিক্রি করি আর না করি, মাস শেষে সুদ দিতেই হবে। মার্চেন্ট ব্যাংকসহ বড় বড় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ না করলে পুঁজিবাজারের অবস্থা এমনই চলবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফ্লোর প্রাইসে শেয়ার আটকে হতাশা তৈরি হয়েছে বেশিরেভাগ বিনিয়োগকারীর মধ্যে। যে কারণে সুযোগ এবং সম্ভাবনা থাকার পরও বিনিয়োগ করছেন না অনেকেই। তাই বাজারকে গতিশীল করতে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার বিষয়টি ভাবা দরকার।

মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিকভাবে একটি বিষয় তৈরি হয়েছে, তাদের শেয়ার ফোর্সড সেল হবে না। ফোর্সড সেল না হোক, তাদের শেয়ার যেহেতু নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, শেয়ারের দাম বাড়ছে না। কিন্তু যারা মার্জিন লোন নিছে, তাদের সুদ দিতে হচ্ছে। এটা ভালো না। আর পুঁজিবাজারকে স্বাধাীনভাবে চলতে দিতে হবে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী বলেন, বিএসইসি যেহেতু ৩০০ কোটি বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে এবং একইসাথে ব্রোকার হাউজগুলো ৩০০ কোটি টাকা দেবে। তাতে বাজার একটা সহায়তা পাবে। এ সময় ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া অতীব জরুরি কাজ হবে। কারণ, ফ্লোর প্রাইস তুলে না দেয়া পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা সুইচ করতে পারছেন না।

ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা দীর্ঘস্থায়ী করতে কাঠামোগত সংস্কার দরকার বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

ছায়েদুর রহমান বলেন, লভ্যাংশের ওপর আমাদের এখন সর্বোচ্চ হারে ট্যাক্স দিতে হয়। এটা প্রত্যাহার করা উচিত। একইসঙ্গে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট ট্যাক্সের ব্যবধানটা বাড়ানো উচিত। এতে বিনিয়োগকারী ও তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা বাড়বে।

আহমেদ রশীদ লালী বলেন, ফ্লোর প্রাইস তুলতে না পারার একমাত্র কারণ হলো, এটি তুলে নেয়া হলে ফোর্সড সেলের চাপ আসবে। ফোর্সড সেলের চাপ আসলে বাজার আবার ডাউন হয়ে যাবে। আমি মনে করি, এ সংক্রান্ত আইন যুগোপযোগী করা দরকার।

শেয়ারের মূল্য বিবেচনায় এখন বিনিয়োগের উপযুক্ত সময় বলেও মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। বলছেন, এ জন্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply