আশিক মাহমুদ:
নিউ মার্কেট জুড়ে এখনও আগুনের দগদগে ক্ষত স্পষ্ট। তার মধ্যেই শেষ সম্বল আকড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় মরিয়া ব্যবসায়ীরা। দোকান ধুয়ে মুছে পরিস্কার করছেন কেউ কেউ। তাদের দাবি, ঈদের আগে মার্কেট চালু হলে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন তারা।
নিউ সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় একটি প্যান্টের দোকান আছে মোহাম্মদ শরিফের। করোনার ক্ষতি কাটিয়ে যখন একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলেন, ঠিক তখনই চোখের সামনে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে সব। এখন শেষ সম্বল আকড়ে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা তার। মোহাম্মদ শরিফ বলেন, আমার এই ক্ষতি কে দেখবে? আমার মতো এমন লোক আছে হাজার হাজার। আমার দোকানের স্টাফ তিনজন। ওদের আমি কোনো টাকা দিতে পারিনি। তারা কেউ ঈদের কেনাকাটা করতে পারেনি, বাসা ভাড়া দিতে পারেনি। এখন আমি কী করবো? ওদের জন্য কী করবো? এটা সবার লস!
শুধু শরিফ না, তার মতো হাজারও ব্যবসায়ী এমন ক্ষতির শিকার। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দোকানের কর্মচারীরাও। ঈদের আগে চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন সবাই। একজন জানালেন, পরিবারে কোনো টাকা দিতে পারেননি তিনি। এখন কীভাবে চলবেন, সেটাও জানেন না। আরেক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী জানান, তার তিন সন্তান। প্রতিদিনই তারা আবদার করছে ঈদের জামার জন্য। কিন্তু তাদের বাবার কাছে নেই একটি টাকাও! প্রতিদিন বাসা থেকে বের হচ্ছেন কেবল অবুঝ সন্তানদের আশ্বাস দিয়ে যে, দুইদিন পরই তাদের ঈদের কেনাকাটা হবে।
পোড়া মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা আবার নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছেন। সকাল থেকেই মার্কেট ধোয়ামোছার কাজ শুরু হয়েছে। কেউ কেউ কাপড়ের পসরাও সাজাতে শুরু করেছেন। শেষ সম্বল যার যা আছে, তাই নিয়ে চেষ্টা করছেন আবারও মাথা তুলে দাঁড়ানোর। ক্রেতাদের প্রতি তারা আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা যেন এবার নিউ মার্কেটে থেকেই কেনাকাটা করেন। সেই সাথে, সরকারের তরফ থেকে সাহায্যের প্রার্থনাও জানান তারা।
আগুনের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে উঠতে ঈদের আগেই মার্কেট চালুর দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীরা। এক ব্যবসায়ী জানান, তারা আস্তে আস্তে দোকান গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। ঈদের আগেই দোকান চালুর জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা। মার্কেট চালুর আগে বিদ্যুৎ সংযোগ ভালো করে পরীক্ষা করার দাবিও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: পরিবহনে আগুন দিয়ে যারা মানুষ পোড়াতে পারে, তারা ক্ষতি করাটাই জানে: প্রধানমন্ত্রী
/এম ই
Leave a reply